সৌদি আরবের পাঠ্যবইতে পরিবর্তন আসছে। গত কয়েক বছর ধরেই গবেষকরা দেশটির পাঠ্যবইগুলোতে নারী-পুরুষের ভূমিকা থেকে শুরু করে শান্তি ও সহিষ্ণুতার বার্তা সংক্রান্ত বিষয়গুলোতে ধারাবাহিক ভাবে কিছুটা উদারতার ইঙ্গিত পাচ্ছেন। খবর রয়টার্সের।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সৌদি আরব ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনীতিক সম্পর্ক সৃষ্টির সম্ভাবনা, ইহুদি ও খ্রিষ্ট ধর্মের অনুসারীদের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি, ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের মধ্যে অব্যাহত সংঘাতসহ কিছু জটিল ও সংবেদনশীল বিষয়ে সৌদি পাঠ্যপুস্তকের বর্ণনার পরিবর্তন সবার মনোযোগ আকৃষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে।
গত মাসে ইসরায়েল ও লন্ডনভিত্তিক ইনস্টিটিউট ফর মনিটরিং পিস অ্যান্ড কালচারাল টলারেন্স ইন স্কুল এডুকেশন (ইমপ্যাক্ট-এসই) প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, সৌদি পাঠ্যপুস্তকের সর্বশেষ সংস্করণগুলোতে ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সম্পর্ককে নেতিবাচক হিসেবে উপস্থাপন করার প্রচলিত ধারা থেকে বের হয়ে এসেছে কর্তৃপক্ষ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে এই পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে পাঠ্যবইতে ইহুদি ধর্মাবলম্বী ও ইসরায়েলকে কীভাবে উপস্থাপন করা হয়, তা পর্যবেক্ষণ করে ইমপ্যাক্ট-এসই।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যেসব বিষয় পাঠ্যপুস্তক থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘খ্রিষ্টান ও ইহুদিরা ইসলামের শত্রু’ এমন ইঙ্গিতপূর্ণ বর্ণনা, অথবা ‘তাওরাত ও ইঞ্জিল শরিফকে বিকৃত করার অভিযোগে ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের সমালোচনামূলক’ লেখা।
ইমপ্যাক্ট-এসই’র পাওয়া তথ্যে দেখা গেছে, ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন বিষয়ে বর্ণনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ‘ইসরায়েলি শত্রু’ কিংবা ‘ইহুদি শত্রু’র মতো নেতিবাচক শব্দের পরিবর্তে ‘ইসরায়েলি দখলদারিত্ব’ অথবা ‘ইসরায়েলি দখলদারি সেনা’ ব্যবহার করা হয়েছে।
ইমপ্যাক্ট-এসই দাবি করেছে, এসব পরিবর্তন ‘ইসরায়েল ও ইহুদিদের প্রতি সৌদি জনগোষ্ঠীর দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে’। এই সংগঠন ২০০০ এর দশকের শুরু থেকেই সৌদি পাঠ্যপুস্তক নিরীক্ষা করছে। প্রতিবেদন তৈরির জন্য তারা ২০২২-২৩ কারিকুলামের ৮০টি এবং এর আগের কারিকুলামের ১৮০টি পাঠ্যপুস্তক নিরীক্ষা করেছে।
ইমপ্যাক্ট-এসই আরও জানিয়েছে, নতুন সৌদি পাঠ্যবইতে হিজবুল্লাহ, ইসলামিক স্টেট, আল কায়েদা, মুসলিম ব্রাদারহুড ও হুতি বিদ্রোহীদের নিয়ে কিছু সমালোচনামূলক প্রবন্ধ ও বর্ণনা যুক্ত করা হয়েছে।