রক্তপাত এড়াতে রাশিয়ার রাজধানীর মস্কোর দিকে যাওয়া বন্ধ করেছে ওয়াগনার বাহিনী। রাশিয়ার গণমাধ্যম রোশিয়া ২৪ জানিয়েছে, বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো ভাড়াটে বাহিনী প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের সঙ্গে আলোচনার পর পিছু হটতে শুরু করে ওয়াগনার বাহিনী।
লুকাশেঙ্কোর প্রেস সার্ভিসের উদ্ধৃতি দিয়ে রোশিয়া ২৪ বলেছে, উত্তেজনা প্রশোমনে রাশিয়ার ভূখণ্ডে আর অগ্রসর না হতে বেলারুশ প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবে রাজি হয়েছেন প্রিগোজিন। তবে ভাড়াটে বাহিনীর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চেয়েছেন প্রিগোজিন।
এতদিন রাশিয়ার সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ইউক্রেন বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ করেছে। দখল করেছে ইউক্রেনের বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ইউক্রেনের সেনাদের সঙ্গে প্রত্যেক জায়গায় শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে এই ওয়াগনার গ্রুপ। ইউক্রেনের অঞ্চল দখল করে বুঝিয়ে দিয়েছে রুশ সেনাদের কাছে। এরপর অন্য কোথাও যুদ্ধের প্রস্তুতি নিয়েছে রাশিয়ার এই ভাড়াটে বাহিনী। তাদের সফলতার প্রশংসা করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নিজেও।
যুদ্ধক্ষেত্রে রাশিয়ার শক্তির অন্যতম এই উৎস হঠাৎই ঘরের শত্রুতে পরিণত হয়। রুশ সেনার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে তারা। এক পর্যায়ে ইউক্রেন ছেড়ে নিজ সেনাদের বিরুদ্ধেই লড়াই করার প্রস্তুতি নেয় রাশিয়ার এই বাহিনী। এরই মধ্যে রাশিয়ার রোস্তভ অঞ্চল দখলে নেওয়ার দাবি করে ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান।
এমন পরিস্থিতিতে আগামী ২৪ ঘণ্টাকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছিল। সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও করা হচ্ছিল। এরই মধ্যে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর সঙ্গে আলোচনায় বসেন ভাড়াটে বাহিনী প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। এরপরই পিছু হটতে শুরু করে ওয়াগনার বাহিনী।
ভাড়াটে বাহিনীর মস্কোর দিকে যাত্রা শুরুর পর রাশিয়ায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ায় শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ খুঁজতে এগিয়ে আসে তুরস্ক। এ বিষয়ে শনিবার (২৪ জুন) তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
এদিকে মস্কো থেকে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে একজন স্বাধীন সামরিক ও প্রতিরক্ষা বিশ্লেষক জানিয়েছেন, ক্ষমতা গ্রহণের পর এই প্রথম এত বড় সংকটের মধ্যে পড়েছেন পুতিন। বিশ্লেষক পাভেল ফেলগেনহাওয়ার বলেন, ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট পুতিন ও রুশ নেতৃত্বের জন্য সত্যিই এটি অনেক বড় চ্যালেঞ্জ।