পাকিস্তানে একটি ইসলামি দলের রাজনৈতিক সম্মেলনে বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৪৪ জন হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় বাজাউর জেলায় ওই হামলার ঘটনায় আরও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছে। পাকিস্তানের প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাওলানা ফজলুর রহমানের দল জমিয়ত উলামা ইসলাম-ফজলের (জেইউআই-এফ) একটি সম্মেলনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। খবর বিবিসির।
রোববার (৩০ জুলাই) বিকেল ৪টার দিকে খাইবার পাখতুনখোয়ার বাজাউর জেলায় ওই হামলার ঘটনা ঘটে। জেলার জরুরি কর্মকর্তা সাদ খান জানান, ওই হামলায় দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাওলানা জিয়াউল্লাহ জান প্রাণ হারিয়েছেন।
পুলিশ বলছে, তারা প্রমাণ পেয়েছে যে ভয়াবহ ওই বিস্ফোরনটি একটি সম্ভাব্য আত্মঘাতী হামলা ছিল। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানে উদ্ধার অভিযান শেষ হয়েছে এবং আহত লোকজনকে ইতোমধ্যেই হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
ওই হামলার ঘটনায় আহত ১৫ জনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন যে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। কী কারণে ওই হামলা চালানো হয়েছে তা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে পুরো এলাকা ঘিরে রেখেছেন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। বিস্ফোরণের কারণ জানতে ইতোমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে।
পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের বাজাউর জেলার খার শহরে অনুষ্ঠিত ওই সম্মেলনে শত শত মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। ওই এলাকা আফগানিস্তানের সীমান্তের কাছে অবস্থিত।
টেলিভিশনের ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, হামলার পরপরই সেখানে বেশ কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স উপস্থিত হয়েছে। ঘটনাস্থলের আশেপাশের এলাকায় জনসাধারণের চলাফেরা বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।
ওই সম্মেলনে হতাহতদের জেলা হাসপাতালে ভর্তি করায় সেখানে রোগীর চাপ বাড়তে দেখা গেছে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সেখানে স্বাস্থ্যের জরুরি অবস্থা জারি করেছে।
এদিকে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও নিউজকে জেইউই-এফের জ্যেষ্ঠ নেতা হাফিজ হামদুল্লাহ বলেন, ওই সম্মেলনে তারও উপস্থিত থাকার কথা ছিল। কিন্তু ব্যক্তিগত কারণে তিনি যেতে পারেননি।
ভয়াবহ ওই হামলার নিন্দা জানিয়ে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন তিনি। হাফিজ হামদুল্লাহ আরও জানিয়েছেন, এর আগেও তাদের দলের কর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। এ বিষয়ে সংসদে কথা তোলার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে দাবি তার।
এখনো পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী ওই ভয়াবহ হামলার দায় স্বীকার করেনি। তবে চলতি বছর বাজাউর প্রদেশে এ ধরনের বেশ কিছু হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেটের স্থানীয় শাখা। এছাড়া তারা এর আগে জেইউআই-এফ দলকে লক্ষ্য করে হামলার কথাও স্বীকার করেছে।