অমর একুশে বইমেলায় প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন বই। বুধবার বইমেলার ১৪তম দিনে নতুন বই এসেছে ৯১টি।
১৪ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির জনসংযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ বিভাগ থেকে বিষয়টি জানানো হয়। আজ মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।
এদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রাফাত আলম মিশু। আলোচনায় অংশ নেন সুজাতা হক এবং মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী।
প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে রাফাত আলম মিশু বলেন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ছিল জনমানুষের সামূহিক আন্দোলন-সংগ্রামের পরম্পরাগত বহুমাত্রিক ঘটনাপুঞ্জের একটি দৃশ্যমান রূপ। আর এই রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে যারা ব্যক্তি থেকে সময়ের নায়ক হয়ে উঠেছিলেন, ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক তাদের মধ্যে অগ্রগণ্য। ৮০ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনে তিনি ছিলেন একাধারে মেধাবী ছাত্র, রাজনৈতিক কর্মী, লেখক, গীতিকার, সুবক্তা এবং আইনজীবী। তবে সবকিছু ছাপিয়ে তার বড় পরিচয় তিনি একজন ভাষাসংগ্রামী এবং মুক্তিযোদ্ধা। গাজীউল হক নিজে লেখক ছিলেন, তাই তার জীবনপাঠের ক্ষেত্রে তার রচনাগুলো গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।
আলোচকরা বলেন, ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসে একজন অনন্য ব্যক্তিত্ব। পারিবারিকভাবে রাজনৈতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে ওঠা গাজীউল হক ভাষা আন্দোলনের প্রাথমিক পর্ব থেকেই সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ছিলেন স্বদেশ, ভাষা, মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ। আপসহীন, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতা ও দৃঢ় ব্যক্তিত্বের কারণে কোনো অপশক্তি তাকে আদর্শচ্যুত করতে পারেনি। শুধু ভাষা আন্দোলনই নয়, দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও শোষণবিরোধী আন্দোলনে তার সংগ্রামী অভিযাত্রা অব্যাহত ছিল।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন, ভাষাসংগ্রামী গাজীউল হক আমৃত্যু তার দুঃসাহসী ও দৃঢ় মানসিকতার স্বাক্ষর রেখেছেন। বাংলাদেশের সংগ্রামী ইতিহাসে তার কর্ম ও আদর্শ চিরঅম্লান হয়ে থাকবে।
আজ ‘লেখক বলছি’ অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন লেখক ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব, কবি শাহেদ কায়েস, লেখক ও সংগীতজ্ঞ তানভীর তারেক এবং কথাসাহিত্যিক মাজহার সরকার।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি মারুফুল ইসলাম, মাসুদুজ্জামান, ইসমত শিল্পী এবং সাহেদ মন্তাজ। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী মাসকুর-এ-সাত্তার কল্লোল, মাসুদুজ্জামান এবং চৈতালী হালদার। পুথিপাঠ করেন মো. শহীদ এবং মো. কুদ্দুস মিয়া । সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী রফিকুল আলম, খুরশীদ আলম, মামুনুল হক সিদ্দিক, মুর্শিদুদ্দীন আহম্মদ, মো. রেজওয়ানুল হক, কাজী মুয়ীদ শাহরিয়ার সিরাজ জয়, আঞ্জুমান আরা শিমুল, চম্পা বণিক, শরণ বড়ুয়া এবং অনন্যা আচার্য।
বৃহস্পতিবারের সময়সূচি
মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘স্মরণ: আবদুল হালিম বয়াতি’ শীর্ষক আলোচনা। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন জোবায়ের আবদুল্লাহ। আলোচনায় অংশ নেবেন শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং মো. নিশানে হালিম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সাইদুর রহমান বয়াতি।