ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তৃতীয় ধাপে বুধবার ১১২টি উপজেলায় ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় রেমাল, নির্বাচনী সহিংসতাসহ নানা কারণে ৮৯টি উপজেলায় ভোট গ্রহণ করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগ প্রার্থিতা উন্মুক্ত করে দেওয়ায় প্রায় সব উপজেলায় দলটির একাধিক নেতা প্রার্থী হয়েছেন।
রাত ১২টা পর্যন্ত এ প্রতিবেদন লেখার সময় বেসরকারি ফলাফলে ৬০টি উপজেলার মধ্যে ৫৩টিতে আওয়ামী লীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা জয়ী হয়েছেন। বাকি সাতটি উপজেলার মধ্যে জাতীয় পার্টি তিনটিতে, বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা একটিতে ও তিনটি উপজেলায় নির্দলীয় প্রার্থী জয় পেয়েছেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আখতারুল ইসলাম ও নীলফামারী সদরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। দিনাজপুরের খানসামায় উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সহিদুজ্জামান শাহ (আওয়ামী লীগে যোগ দিলেও এখন বিচ্ছিন্ন), সদরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদ সরকার ও চিরিরবন্দরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুনীল কুমার সাহা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
লালমনিরহাট সদরে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামরুজ্জামান সুজন, রংপুর সদরে নির্দলীয় প্রার্থী ইকবাল হোসেন ও গঙ্গাচড়া উপজেলায় বিএনপির বহিস্কৃত নেতা মোকাররম হোসেনকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এজাহার আলী, ভূরুঙ্গামারীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুন্নবী চৌধুরী ও নাগেশ্বরীতে উপজেলা জাতীয় পার্টির সদস্য কেএম মহিবুল হক জয়ী হয়েছেন।
বগুড়ার শাজাহানপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সোহরাব হোসেন সান্নু ও সদরে জেলা যুবলীগের সভাপতি শুভাশীষ পোদ্দার লিটন জয়ী হয়েছেন। নওগাঁর রানীনগরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাহিদ সরদার ও আত্রাইয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এবাদুর রহমান প্রামাণিক চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
পাবনার ঈশ্বরদীতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এমদাদুল হক, আটঘরিয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. তানভীর ইসলাম ও সদরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সোহেল হাসান বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। নাটোরের গুরুদাসপুরে জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আহাম্মদ আলী মোল্লা বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন।
সাতক্ষীরা সদরে জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সম্পাদক মশিউর রহমান ও কলারোয়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আমিনুল ইসলাম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। যশোরের বাঘারপাড়ায় জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এফ এম আশরাফুল কবির, অভয়নগরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার অলিয়ার রহমান নির্বাচিত হয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম ও আশুগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য জিয়াউল করিম খান সাজু চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। কুমিল্লার বুড়িচংয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আখলাক হায়দার, ব্রাহ্মণপাড়ায় দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আবু তৈয়ব অপি, মুরাদনগরে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপকমিটির সদস্য আহসানুল আলম কিশোর ও দেবীদ্বারে উপজেলা যুবলীগের সদস্য মো. মামুনুর রশিদ বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক গোলাম শরীফ চৌধুরী পিপুল, কক্সবাজারের টেকনাফে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি জাফর আহমদ, চট্টগ্রামের চন্দনাইশে প্রবাসী ব্যবসায়ী জসীম উদ্দীন আহমেদ ও আনোয়ারায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি কাজী মোজাম্মেল হক জয়ী হয়েছেন।
শরীয়তপুরের গোসাইরহাটে আওয়ামী লীগ–সমর্থিত ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন ও ডামুড্যায় জেলা যুবলীগের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রশিদ গোলন্দাজ নির্বাচিত হয়েছেন। কিশোরগঞ্জের মিঠামইনে সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ছোট বোন আছিয়া আলম, ইটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী কামরুল হাসান ও করিমগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা মো. মোজাম্মেল হক জয়ী হয়েছেন।
ফরিদপুরের সদরপুরে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম বাবুল ও ভাঙ্গায় নির্দলীয় কাওসার ভূঁইয়া নির্বাচিত হয়েছেন। মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আওলাদ হোসেন মৃধা ও শ্রীনগরে উপজেলার কোলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এম মাহবুব উল্লাহ নির্বাচিত হয়েছেন।
টাঙ্গাইল সদরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল হোসেন খান, দেলদুয়ারে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদুল হাসান এবং নাগরপুরে টাঙ্গাইল-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আব্দুল বাতেনের ছেলে কে এম সালমান শামস নির্বাচিত হয়েছেন।
নেত্রকোনার মদনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ইফতেখারুল আলম খান চৌধুরী ও মোহনগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহীদ ইকবাল বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মো. বদরুল আলম নির্বাচিত হয়েছেন। জামালপুরের মেলান্দহে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. দিদারুল পাশা ও মাদারগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান রহমতুল্যাহ জয় পেয়েছেন।
সিলেটের বালাগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনহার মিয়া, বিয়ানীবাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম পল্লব ও ফেঞ্চুগঞ্জে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশফাকুল ইসলাম সাব্বির বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। সুনামগঞ্জের ছাতকে আওয়ামী লীগের কর্মী রফিকুল ইসলাম কিরণ ও দোয়ারাবাজারে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক দেওয়ান আল তানভীর আশরাফী জয় পেয়েছেন।
হবিগঞ্জের লাখাইয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিউল আলম আজাদ, সদরে পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মোতাচ্ছিরুল ইসলাম ও শায়েস্তাগঞ্জে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রশিদ তালুকদার জয়ী হয়েছেন। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে উপজেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ ভানুলাল রায় এবং কমলগঞ্জে আওয়ামী লীগ নেতা ও কৃষিমন্ত্রীর ছোট ভাই মো. ইমতিয়াজ আহমেদ বিজয়ী হয়েছেন।