গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর তাণ্ডব চলছেই। সেখানে প্রায় ৮ মাস ধরে চলা সংঘাতে ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। দীর্ঘদিন ধরে চলা যুদ্ধ-সংঘাতে সেখানে খাবার এবং পানির তীব্র সংকট তৈরি হয়েছে।
আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজা সিটির একটি জনাকীর্ণ আশ্রয়কেন্দ্র এবং খান ইউনিসের একটি শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ওয়াফা নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। হামলার পর একটি বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে থাকা লোকজনকে উদ্ধারে কাজ করছেন উদ্ধারকর্মীরা।
মাসের পর ধরে চলা ইসরায়েলি আগ্রাসনে দুর্ভিক্ষের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে গাজা। সেখানে ৪ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ইসরায়েলি বাহিনী ভয়াবহ আগ্রাসনে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাকও সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে একদিকে খাবার নিয়ে ত্রাণবাহী গাড়ি অপেক্ষা করছে অন্যদিকে তীব্র ক্ষুধায় ছটফট করছে গাজার ছোট ছোট শিশু, নারী, পুরুষ এবং বয়স্ক লোকজন।
সেখানে সংঘাত শুরুর পর কয়েকবার মাত্র ত্রাণবাহী গাড়ি গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। বাইরে থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এবং ক্রমাগত হামলা চলতে থাকায় গাজায় ভয়াবহ বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। ছোট ছোট শিশুরা খাবারের অভাবে এবং তীব্র পুষ্টিহীনতায় মারা যাচ্ছে। একদিকে দফায় দফায় বোমা হামলা অন্যদিকে খাদ্য সংকট, বাসস্থানের সংকট, একটু মাথা গোজার নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব সবকিছু মিলিয়ে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের যেন কোনো শেষ নেই। কবে এই পরিস্থিতি ঠিক হবে সেটাও কারও জানা নেই।
ত্রাণসামগ্রী নিতে যাওয়া লোকজনের ওপরও হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এমনকি ত্রাণবাহী গাড়ি, বিভিন্ন ত্রাণ সংস্থাও হামলার শিকার হচ্ছে।
ফিলিস্তিন শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থা এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজা ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। ট্রাকে করে খাবার এবং বিশুদ্ধ পানি নিয়ে অপেক্ষায় থাকার পরেও শিশুরা অপুষ্টি এবং পানিশূন্যতায় মারা যাচ্ছে। ইসরায়েলের ক্রমাগত হামলায় ফিলিস্তিনিদের কাছে ত্রাণ সহায়তায়ও পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে অভিযানের নামে গত ৮ মাসে কমপক্ষে ৩৭ হাজার ৬৫৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৮৬ হাজার ২৩৭ জন।