ফ্রান্সে প্রথম দফার ভোটে এগিয়ে থাকলেও দ্বিতীয় দফার ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে কট্টর ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র্যালি (আরএন)। আনুষ্ঠানিক ফলাফল থেকে দেখা যাচ্ছে, দ্বিতীয় দফার ভোটে বামপন্থীদের জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনপিই) জয়ী হয়েছে এবং পার্লামেন্টে তারাই সবচেয়ে বেশি আসন পেতে যাচ্ছে। খবর বিবিসির।
নির্বাচনের প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী এসেম্বল জোট দ্বিতীয় অবস্থানে আছে এবং আরএন পার্টি এখন তৃতীয় অবস্থানে সরে গেছে। রোববারের এই ভোটে কট্টর-ডানপন্থি ন্যাশনাল ব়্যালিকে ঠেকাতে একজোট হয়ে লড়েছে বামপন্থি জোট দলগুলো।
প্রথম দফা ভোটে ডানপন্থিদের জয়ে উদার ও মধ্যপন্থীদের মধ্যে শঙ্কা তৈরি হয়। আরএন যেন দ্বিতীয় দফায় জয়ী হতে না পারে সেজন্য বামপন্থী জোট এবং ম্যাক্রোঁর জোটের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। এই দুই জোট মিলে দুই শতাধিক প্রার্থীকে প্রত্যাহার করে নেন। আরএনের বিরুদ্ধে পড়া ভোটগুলো যেন একজনই পান সেজন্যই বাম ও মধ্যপন্থিদের এই কৌশলই শেষ পর্যন্ত কাজে দিয়েছে।
তবে কোনো দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় সরকার গঠন নিয়ে জটিলতা শুরু হবে। কারণ দেশটিতে তিন দলের একসঙ্গে কাজ করার পূর্ব অভিজ্ঞতা দেখা যায়নি। দ্বিতীয় দফার নির্বাচন নিয়ে এখনো কোনো কোনো মন্তব্য করেননি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ।
গত ৩০ জুন দেশটির প্রথম দফার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে ফ্রান্সের পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টর ডানপন্থিরা প্রথম ধাপের নির্বাচনে কখনোই জয়লাভ করতে পারেনি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এবারই প্রথম কোনো ডানপন্থি দল প্রথম দফার ভোটে জয় পেয়েছে। সরকার গঠনের ব্যাপারেও তারা বেশ আশাবাদী ছিল। কিন্তু দ্বিতীয় দফার নির্বাচন সবকিছু উল্টে দিয়েছে।
এক মাস আগেই নির্বাচনের ডাক দেন ম্যাক্রোঁ। আগাম এই নির্বাচন নিয়ে ম্যাক্রোঁর মিত্রদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ২০২৭ সালের আগে পার্লামেন্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল না। কিন্তু ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে ডানপন্থীদের অগ্রগতিতে শঙ্কিত হয়ে নিজেদের কর্ত্বত্ব টিকিয়ে রাখতেই আগাম নির্বাচনের ডাক দেন মাক্রোঁ।
এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ৫৭৭ আসনের মধ্যে বামপন্থিরা ১৭৭টি আসনে জয়ী হয়েছে। এছাড়া ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থী এসেম্বল জোট পেয়েছে ১৪৮টি এবং মেরিন লে পেনের ন্যাশনাল র্যালি পেয়েছে ১৪২টি আসন। ফ্রান্সে সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজন হয় ২৮৯টি আসন। সে কারণে এখন বাম জোটকে সরকার গঠন করতে হলে অন্যদের সমর্থন নিতে হবে।