বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের সময় নিহতদের নিয়ে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে রমরমা মামলা বাণিজ্য। মূলতঃ অনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্যই গণহারে হত্যা মামলার আসামি করা হচ্ছে ব্যবসায়ী, শিক্ষাবিদ, কবি, সাহিত্য, সাংবাদিকসহ অনেক নিরপরাধ মানুষকে। আবার মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার শর্তে ব্যক্তিভেদে নেওয়া হচ্ছে ২০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা করে চাঁদা! ইতোমধ্যে মামলা বাণিজ্যের সঙ্গে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে মত ও পথ অনলাইনসহ দেশের প্রথম সারির জাতীয় দৈনিক সমূহে। যা জনমনে অন্তর্বর্তী সরকারের বিষয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি করেছে। এমতাবস্থায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পুলিশ ও অন্য সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের জনআস্থা ফিরে আনাকে প্রধান্য দেওয়া উচিৎ। এক্ষেত্রে সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া কাউকে গ্ৰেফতার কিংবা হয়রানি না করাই হতে পারে জনআস্থা ফিরিয়ে আনার প্রথম পদক্ষেপ।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবীরা বলছেন, যেকোনো হত্যা মামলার রায় বাদীর পক্ষে আসার পূর্ব শর্ত হচ্ছে আসামিদের সংশ্লিষ্টতা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করা। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি অধিকাংশ মামলাই রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার উদ্দেশ্যে দায়ের করা হচ্ছে এবং মামলাগুলোর এজাহার খুবই দুর্বল। এমনকি মামলাগুলোর ধরনও একই, প্রতিটি মামলার প্রথম দিকে আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের ১৫-২০জন নেতাসহ ২০০-৩০০জন আসামি! অজ্ঞাতনামা আরও ৪০০-৫০০ জন আসামি। এসব মেরিটবিহীন মামলা প্রাথমিক ধাপই পেরোতে পারবে না। ফলে বেঁচে যেতে পারেন প্রকৃত অপরাধীরা। এতে বিচার প্রার্থীরা ন্যায়বিচার নাও পেতে পারেন।
সবশেষে বলতে চাই, কেউ একজন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা হোক, জেলা প্রশাসক হোক, বিভাগীয় কমিশনার হোক, সচিব হোক কিংবা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হোক যদি তিনি প্রকৃত অপরাধী হন, তার বিরুদ্ধে যদি হত্যার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, দুর্নীতির অভিযোগ থাকে, অর্থ আত্মসাতের ঘটনা থাকে তাহলে অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। তবে অহেতুক যাতে নিরপরাধ কোনো ব্যক্তি হয়রানির শিকার না হয় সেটিও সরকারকে নিশ্চিত করতে হবে।