বিএনপি নেতার কোম্পানির সঙ্গে বিরোধ, দীপ্ত টিভির কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

রাজধানী ঢাকার হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্ট এলাকায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল দীপ্ত টিভির এক কর্মকর্তাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে একটি ডেভেলপার কোম্পানির বিরুদ্ধে। নিহত তানজিল জাহান ইসলাম (৩২) টেলিভিশনটির সম্প্রচার বিভাগে কর্মরত ছিলেন।

ডেভেলপার কোম্পানির নাম প্লেজেন প্রোপার্টিস লিমিটেড, যার মালিক বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি। তিনি ২০২০ সালে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন।

বৃহস্পতিবার (১০ আক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তানজিলের হাতিরঝিলের মহানগর প্রজেক্টের বাসায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

নিহত তানজিলের বাবা সুলতান আহমেদ জানান, তিনজন মালিকের জমি নিয়ে প্লেজেন প্রোপার্টিস একটি ভবন নির্মাণ করে। ৯ তলা ওই ভবনে ২৭টি ফ্ল্যাট ছিল। প্রত্যেক জমির মালিককে পাঁচটি করে ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু তাকে দুটি ফ্ল্যাট দেওয়া হয়। বাকি তিনটির মধ্যে একটি ফ্ল্যাট মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তার শ্বশুরের কাছে বিক্রি করেন ডেভেলপার কোম্পানির মালিক।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার বাকি দুটি ফ্ল্যাটের অভ্যন্তরীণ কাজ শুরু করার সময় ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত ভবনের সিসি ক্যামেরা ভেঙে হামলা চালায়। তানজিল নিচ থেকে ফ্ল্যাটের দিকে এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালায়। গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে হামলায় অংশ নেয়া ২ জনের রাজনৈতিক পরিচয় সনাক্ত করতে পেরেছে মত ও পথ। তারা হলেন- ৩৬নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক গাজী জাকির হোসেন ও হাতিরঝিল থানা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক মামুনুর রশীদ ওরফে কালা মামুন।

সুলতান আহমেদ বলেন, আমাদের ওপর হামলা হয়েছে কিন্তু পুলিশ আমাদের অভিযোগ নিত না। আজও হামলার কথা জানালে পুলিশ প্রায় ২০ মিনিট পর আসে।

প্লেজেন প্রোপার্টিস লিমিটেডের মালিক রবিউল আলম রবি দাবি করেন, তারা আদালত থেকে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন, কিন্তু সুলতান সাহেব তা অমান্য করে কাজ করছিলেন। তিনি মারধরের ঘটনা অস্বীকার করেন।

নিহতের পরিবারের অভিযোগ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মামুন হামলায় অংশ নিয়েছিলেন। মামুন বলেন, আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণীতভাবে চাপে ফেলা হচ্ছে। আমি ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।

হাতিরঝিল থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, ঘটনা তদন্ত চলছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। তারা হামলায় জড়িত ডেভেলপার কোম্পানির লোকজনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন।

শেয়ার করুন