মিয়ানমারের যুদ্ধ-বিধ্বস্ত রাখাইন রাজ্যের ২০ লাখেরও বেশি মানুষ ২০২৫ সালের মাঝামাঝিতে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি হতে পারে বলে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদন উঠে এসেছে। খবর রয়টার্সের।
জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) অনুসারে, বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে বীজ ও সারের ঘাটতি, তীব্র আবহাওয়ার কারণে ধানের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। এছাড়া ব্যাপক বাস্তুচ্যুতির কারণে সেখানকার বাসিন্দারা অন্যান্য কৃষি পণ্য চাষাবাদ করতে পারছে না বলেও উল্লেখ করা হয়েছে ইউএনডিপির প্রতিবেদনে।
‘নজিরবিহীন বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে আছে রাখাইন’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইউএনডিপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিধিনিষেধের কারণে রাখাইনে রেড ক্রসসহ আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো মানবিক সাহায্য প্রদানে গুরুতর সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। একই সঙ্গে চলমান সংঘাতের কারনে দেশটির ওই রাজ্যের সঙ্গে ইতিমধ্যে প্রধান রাজ্যগুলোর বাণিজ্যিক সড়ক বন্ধ রয়েছে। এতে রাজ্যটিতে আন্তর্জাতিক এবং অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহনের প্রবেশ পথ খুবই সীমিত।
কৃষি অর্থনীতি সংকটে থাকায় ইউএনডিপি স্থানীয় খাদ্য উৎপাদনের পূর্বাভাসে জানিয়েছে- মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে রাজ্যে এর চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ পুরণ করতে পারবে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাখাইনে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এই বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৬০ শতাংশেরও বেশি বেড়েছে। এতে পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ এখন সম্পূর্ণভাবে সাহায্যের ওপর নির্ভর হয়ে পড়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচিত সরকার অং সান সু চিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন সশস্ত্র দলের সংঘর্ষে উত্তাল হয়ে উঠেছে মিয়ানমার।
ইউএনডিপি আরও জানিয়েছে, জান্তার ক্ষমতা দখলের পর থেকে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং দেশটির বেশিরভাগ অংশ বিশৃঙ্খলার মধ্যে থাকায় মিয়ানমারে মানবিক সহায়তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
অন্যদিকে রাখাইনে বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের একটি নতুন তরঙ্গের সূচনা করেছে বলেও ইউএনডিপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।