পুলিশের ৩৩তম মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হয়েছেন বাহারুল আলম। তিনি একসময় পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) প্রধান ছিলেন। এদিকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নতুন কমিশনার হয়েছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চাকরি হারানো অতিরিক্ত আইজিপি শেখ মো. সাজ্জাত আলী।
দুই বছরের জন্য তাদের নিয়োগ দিয়ে বুধবার পৃথক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
উপসচিব আবুল হায়াত মো. রফিক স্বাক্ষরিত একটি প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) বাহারুল আলমকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি-আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।
অপর প্রজ্ঞাপনে ডিএমপি কমিশনার পদে দায়িত্ব পাওয়া প্রাক্তন অতিরিক্ত আইজিপি শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি-আধা-সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্ম-সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে ঢাকা মেট্রাপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পুলিশ কমিশনার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের কথা বলা হয়। এই নিয়োগের অন্যান্য শর্ত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশে বড় রদবদল হয়। তখন পুলিশের ৩২তম মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হিসেবে নিয়োগ পান ট্রাফিক অ্যান্ড ড্রাইভিং স্কুলের কমান্ড্যান্ট মো. ময়নুল ইসলাম। আর ৩৭তম ডিএমপি কমিশনার হন মো. মাইনুল হাসান। তাদের এখন পুলিশ সদরদপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, পুলিশপ্রধান হিসেবে নতুন দায়িত্ব পাওয়া বাহারুল আলম একসময় এসবির প্রধান ছিলেন। দুই দফা পদোন্নতিবঞ্চিত এই কর্মকর্তা ২০২০ সালে অবসরে যান। ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ সদরদপ্তরের শান্তিরক্ষা বিভাগে পুলিশ লিয়াজোঁ অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। ২০১৫ সালে আফগানিস্তানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের সিনিয়র পুলিশ অ্যাডভাইজার হিসেবে কাজ করেন। এর আগে ক্রোয়েশিয়া, সার্বিয়া, কসোভো ও সিয়েরা লিওনে দায়িত্ব পালন করেন।
অন্যদিকে সাজ্জাত আলী বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে ১৯৮৪ সালে পুলিশে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি একসময় ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার ছিলেন। তাছাড়া সাজ্জাত আলী লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার ছিলেন। চাকরি জীবনে তিনি চট্টগ্রাম ও ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি ছিলেন। এছাড়া হাইওয়ে পুলিশ গঠন হলে সেখানেও ডিআইজির দায়িত্ব পান। পরবর্তীতে অতিরিক্ত আইজিপি হিসেবে পুলিশ সদরদপ্তরে কর্মরত ছিলেন। মেধাবী, কর্মঠ ও সৎ পুলিশ অফিসার হিসেবে বাহিনীতে সুনাম আছে সাজ্জাত আলীর। পুলিশের এই কর্মকর্তার বাড়ি ঝিনাইদহের শৈলকূপায়।
গত সোমবার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর চাকরি পুনর্বহাল করে অন্তর্বর্তী সরকার। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘‘প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল-১-এর মামলা নম্বর ৩৩/২০১৭-এর ৩ সেপ্টেম্বরের রায় অনুযায়ী পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (চলতি দায়িত্ব) শেখ মো. সাজ্জাত আলীকে ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ভূতাপেক্ষভাবে চাকরিতে পুনর্বহাল হিসেবে গণ্য করা হলো। তিনি আদালতের আদেশানুযায়ী সব প্রাপ্য বেতন-ভাতাদি এবং অবসরজনিত আর্থিক সুবিধাদি প্রাপ্য হবেন।”