সব আসামিকে খালাস দিয়ে প্রহসনের রায়: হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক

মাহবুব উল আলম হানিফ
ফাইল ছবি

দুই দশক আগে ঢাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার মামলায় হাইকোর্টের রায়ে আসামিদের সবাইকে খালাস দেওয়ার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।

আলোচিত এ মামলার আসামিদের আপিল ও ডেথ রেফারেন্সের শুনানি করে ১ ডিসেম্বর (রোববার) হাইকোর্টের এ রায় আসার পর হানিফ এক বিবৃতিতে এ নিন্দা জানান।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, ‘ড. ইউনূসের রিসেট বাটনের যথাযথ কার্যকারিতা আমরা দেখতে পেলাম আজকের এই রায়ের মাধ্যমে। উনি আমাদের সবকিছু ভুলিয়ে দিতে চেয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় ২১ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনাকে পুরোপুরি মুছে ফেলার এই অপচেষ্টা।’

সুস্পষ্ট এবং সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকার পরও এই প্রহসনের রায় জাতির জন্য লজ্জার মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে হরকাতুল জিহাদের নেতা মুফতি আবদুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আদালতে উপস্থাপিত মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে বলা হয়, বিএনপি-জামায়াত সরকারের শীর্ষ কয়েকজন ব্যক্তির সহায়তায় তিনি আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলো।’

‘জবানবন্দিতে উল্লেখ করা হয়, বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুল সালাম পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিনের মাধ্যমে পিন্টুর সাথে প্রথম যোগাযোগ হয়। এরপর তার মাধ্যমে তারা তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কাছে কাছে যায়। লুৎফুজ্জামান বাবর এবং কুমিল্লার তৎকালীন সংসদ সদস্য কায়কোবাদকে সঙ্গে নিয়ে তারা হাওয়া ভবনে যায়।’

হানিফ বলেন, ‘মুফতি হান্নান তার জবানবন্দিতে জানিয়েছে, হাওয়া ভবনের বৈঠকে আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, হারিছ চৌধুরী, লুৎফুজ্জামান বাবর, ডিজিএফআই-এর তৎকালীন প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী এবং ব্রিগেডিয়ার (অব.) আব্দুর রহিম উপস্থিত ছিলেন। তাদের উপস্থিতির কিছুক্ষণ পর তারেক রহমান সেখানে আসেন।’

‘এমনটাই জানা যাচ্ছে আদালতে দেওয়া মুফতি হান্নানের জবানবন্দি থেকে। মুফতি হান্নানের ভাষ্য অনুযায়ী, তার সহযোগীরা যাতে হাওয়া ভবনে আর না আসে সেটি জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘আপনারা বাবর সাহেব এবং আব্দুস সালাম পিন্টুর সাথে যোগাযোগ করে কাজ করবেন।’

হানিফ আরও বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনের মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। এতে কি প্রমাণিত হলো? দেশে কি ২১ আগস্টে কিছুই ঘটেনি? পাকিস্তান থেকে নিয়ে আসা আর্জেস গ্রেনেডগুলো কি আকাশ থেকে আওয়ামী লীগের সমাবেশস্থলে পড়েছিল? ২৪ জন মানুষের নিহত হয়েছিল, ৫০০ জন আহত হয়েছিল এমনি এমনিতেই?’

‘আজ এই রায়ের মাধ্যমে আরেকবার প্রমাণিত হলো, এই সরকার বিচারব্যবস্থাকে পুরোটাই জিম্মি করে রেখেছে। দেশে মব জাস্টিসের নামে মব কিলিং করে বিচারহীনতার যে সংস্কৃতি চালু হয়েছে এটার মূল্য অচিরেই চুকাতে হবে। এই রায়ের বিরূদ্ধে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই।’

শেয়ার করুন