বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ২৩৫ বছরের নির্বাচনী রাজনৈতিক ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয় স্মরণীয়। ১৩২ বছরের রেকর্ড ভেঙে দ্বিতীয় বারের মতো জয় পেয়েছেন তিনি। স্থানীয় সময় ২০ জানুয়ারি (সোমবার) থেকে হোয়াইট হাউজে শপথ গ্রহণের মাধ্যমে তার দ্বিতীয় যুগ শুরু হলো। আমরা মার্কিন জনগণের রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে দ্বিতীয়বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানাই।
বিশ্বব্যাপী মার্কিন নীতির প্রভাব সর্বজনবিদিত। দেশটির ক্ষমতার পালাবদলে পররাষ্ট্রনীতিতে কী পরিবর্তন আসবে, ট্রাম্পের নেতৃত্বে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক কেমন হবে, এটা এক বড় প্রশ্ন। তবে অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায়, দেশটির পররাষ্ট্রনীতিতে রাতারাতি বড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা ক্ষীণ। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি পররাষ্ট্র বিভাগ, পেন্টাগন, ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি কাউন্সিল, সর্বোপরি কংগ্রেসের ভূমিকার ওপর নির্ভরশীল। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় এবার বিশেষত রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ক্ষেত্রে মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। আর সেটি যদি এ যুদ্ধ বন্ধে সহায়ক হয়, তাহলে তা বিশ্বশান্তির অনুকূলে কাজ করবে বলা যেতে পারে। মধ্যপ্রাচ্য, বিশেষত ফিলিস্তিন ইস্যুতেও মার্কিন নীতির বিশেষ পরিবর্তন দেখতে চায় বিশ্ববাসী। অবশ্য দুদিন আগে দীর্ঘ ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে চলমান বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসানে অবশেষে ফিলিস্তিনের গাজায় কার্যকর হয়েছে বহুল আকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি। চুক্তির আওতায় প্রথম দিনে ইসরায়েলি তিন নারী বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে গাজা উপত্যকার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাস। এরপরই কারাগার থেকে ৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত সকলেই নারী ও শিশু। সোমবার (২০ জানুয়ারি) এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আল জাজিরা। আমরা আশা করব, এ ইস্যুতে দুই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের ওপর জোর দেবে নতুন মার্কিন প্রশাসন এবং ট্রাম্পের পররাষ্ট্রনীতি বিশ্বশান্তির অনুকূলে ভূমিকা রাখবে।
আমরা মনে করছি, ট্রাম্পের জয়ে বাংলাদেশে বিদ্যমান বিদেশনীতির বড় কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। বরং দুই দেশের পরিবর্তিত বাস্তবতায় পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং বাণিজ্যিক সম্পর্কন্নোয়নের সম্ভাবনা রয়েছে। অবশ্য এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা, যোগাযোগ ও হোমওয়ার্ক থাকতে হবে।
মার্কিন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বের জন্য যে বার্তা রয়েছে, তা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুদ্ধবিরোধী ভূমিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের প্রতিশ্রুতি মার্কিন জনগণ সমর্থন জানিয়েছেন। বিশেষ করে, তার নেতৃত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি অনুরণিত হয়েছে। আমরা আশাবাদী যে, ট্রাম্পের নেতৃত্বে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমৃদ্ধ হবে এবং বিশ্বজুড়ে অন্যদের অনুপ্রাণিত করবে।