আগামীকাল বইমেলা : চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি

সংস্কৃতি ডেস্ক

মাসব্যাপী অমর একুশে গ্রন্থমেলা শুরু হতে বাকি আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা। তাই বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে চলছে স্টল গোছানোর শেষ মুহূর্তের কাজ। ব্যস্ততা চোখে পড়ে একাডেমির কর্মকর্তা ও প্রকাশনীর লোকদের মধ্যে।

বইমেলার এই প্রস্তুতির ভেতরই গতকাল বুধবার বাংলা একাডেমিতে এসেছিলেন ছড়াকার আসলাম সানী। বললেন, ‘কবি-সাহিত্যিকদের প্রাণের বইমেলা শুরু হচ্ছে। অনুভূতি রোমাঞ্চকর। এবারও আমার নতুন বই প্রকাশিত হবে। এ ছাড়া মেলার মূল মঞ্চের অনুষ্ঠানে আমার বক্তৃতাও থাকবে। এবার প্রথম আমি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করব।’

মেলায় বেশ কিছু প্রকাশককেও দেখা যায়। চন্দ্রাবতী একাডেমির পরিচালক কামরুজ্জামান কাজল বলেন, ‘এবার আমাদের ৩০টার মতো নতুন বই প্রকাশ হবে। এবার আমরা সংখ্যায় নয়, বইয়ের মানের দিকে বেশি নজর দিয়েছি।’

অন্বেষার প্রকাশক শাহাদাত হোসেনের প্যাভিলিয়ন গোছানো প্রায় শেষ। বললেন, ‘প্যাভিলিয়ন গোছানো শেষ। এবার ৫০টির বেশি নতুন বই প্রকাশ করেছি। অন্বেষার পাঠকরা এবারও নিরাশ হবেন না। তাঁদের পছন্দ অনুযায়ী সব ধরনের বই আমরা প্রকাশ করেছি।’

বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে প্রতিবারের মতো এবারও থাকছে জনপ্রিয় রম্য ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’-এর স্টল। পুরোপুরি শেষ হয়েছে স্টল তৈরির কাজ। কাঠমিস্ত্রি সাদ্দাম বলেন, ‘আমিই প্রতিবার উন্মাদের স্টল তৈরি করি। এবারও করেছি। সবার আগে আমার কাজ শেষ হয়েছে। আহসান হাবীব স্যার স্টল দেখতে এখনো আসেননি, তবে ফোনে কথা বলে নিয়েছেন।’

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্সের কাজ এখনো শেষ হয়নি। কাঠমিস্ত্রি হৃদয় বললেন, ‘দিন-রাত মিলেই আমরা কাজ করছি, তবে এখনো শেষ করতে পারিনি। আশা করছি, মেলা শুরুর আগে সব কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।’

সাহস পাবলিকেশন্সের প্রকাশক নাজমুল হুদা রতন বললেন, ‘১০ বছর ধরে বইমেলায় আমরা অংশগ্রহণ করছি। এবার আশা করেছিলাম, দুটি স্টল আমরা পাব, কিন্তু পাইনি। এটা অনেক দুঃখজনক। আমাদের স্টল গোছানোর কাজ শেষ। গতবারের তুলনায় এবার নতুন বই কম প্রকাশ করছি।’

কলি প্রকাশনীর প্রকাশক এস এম মহিউদ্দিন কলিও গতবারের তুলনায় এবার কম বই প্রকাশ করছেন। বললেন, ‌‘চল্লিশটার মতো নতুন বই প্রকাশ করছি আমরা। শিশুতোষ থেকে শুরু করে সব ধরনের বই আমরা করেছি। তবে গতবারের থেকে এবার বই কম করছি, কারণ কাগজের দাম এবার বেড়ে গেছে।’

প্রতিবারের মতো এবারও শিশুদের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে রয়েছে নানা আয়োজন। শিশুদের জন্য বিশেষ বইয়ের স্টল তো থাকবেই। এ ছাড়া শুক্র ও শনিবার থাকবে ‘শিশুপ্রহর’। শিশুদের প্রকাশনা ‘ঝিঙেফুল’-এর স্টলে এবার ৩০টি নতুন বই পাওয়া যাবে বলে জানালেন প্রকাশক গিয়াসউদ্দীন খসরু। বললেন, ‘শিশুদের উপযোগী ছড়া, গল্প ও উপন্যাসের বই আমরা প্রকাশ করেছি।’

আগামীকাল ১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে গ্রন্থমেলা উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য ‘বিজয় বায়ান্ন থেকে একাত্তর : নবপর্যায়’। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে বইমেলা। তবে শুক্র ও শনিবার মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

এবারের মেলার নকশা করেছেন স্থপতি এনামুল করিম নির্ঝর। মেলায় ছয়শর বেশি স্টল থাকবে। প্যাভিলিয়ন থাকবে ৪২টির মতো। এ ছাড়া প্রতিবারের মতো বাংলা একাডেমির প্রাঙ্গণে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের একশটি স্টল থাকবে। প্রতিবারের মতো এবারও মেলার মূল মঞ্চে ধারাবাহিক সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে