সোনালী ব্যাংকে নিজের জমানো অর্থ তুলতে আসেন খাদিজা বেগম। কাউন্টারে চেক জমা দিলে তাকে টাকা দেওয়া হয়। এ সময় পেছন থেকে এক ব্যক্তি বলেন, ‘আমি ব্যাংকের লোক। আপনাকে যে টাকাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেগুলো জাল। আমাকে দেন, আমি পাল্টে দিচ্ছি।’ তিনি সরল বিশ্বাসে টাকাগুলো ওই ব্যক্তির হাতে দেন। পরে খাদিজার ৬৮ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যান ওই ব্যক্তি।
সোমবার (৩ মার্চ) সকালে রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় সোনালী ব্যাংকের ভবানীগঞ্জ শাখার ভেতর এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী খাদিজা বেগম (৪৫) একই উপজেলার চানপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ঈদ ও রোজার কেনাকাটা জন্য ৬৮ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। টাকাগুলো তিনি জমিয়ে রেখেছিলেন। এ ঘটনায় বিকালে বাগমারা থানায় জিডি করেছেন খাদিজা।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সকালে ব্যাংকের ওই শাখায় টাকা উত্তোলনের জন্য আসেন খাদিজা। নিজের জমানো ৬৮ হাজার টাকা একটি চেকের মাধ্যমে তুলতে চান। এজন্য চেকটি নারী গ্রাহকদের বুথে জমা দেন। এ সময় তার পেছনে পরিপাটি অবস্থায় তিন ব্যক্তি ছিলেন। ব্যাংক থেকে টাকা বুঝে পাওয়ার পর ওই তিন ব্যক্তি তার কাছাকাছি আসেন। এদের একজন নিজেকে ব্যাংকের লোক হিসেবে পরিচয় দিয়ে জানান, ভুলক্রমে তাকে জাল টাকা দেওয়া হয়েছে। সেগুলো পাল্টে আসল নোট দেওয়ার আশ্বাসে টাকাগুলো ওই নারীর কাছ থেকে নেন তারা। পাশের কাউন্টারে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে ব্যাংকের ভেতর থেকে দ্রুত সটকে পড়েন তারা। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ও স্বজনদের বিষয়টি জানানো হয়। ব্যাংকের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে তিন ব্যক্তিকে শনাক্ত এবং টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালানো হয়। তবে তাদের শনাক্ত করতে না পেরে বিকালে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
খাদিজা বেগম জানান, প্রতারক নিজেকে ব্যাংকের লোক পরিচয় দেওয়াতে বিশ্বাস হয়েছে। ব্যাংকের ভেতরে এ রকম হবে, তা ভাবতেও পারেননি। তিনি টাকা উদ্ধারসহ প্রতারকদের গ্রেফতারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মনে হয়েছে, প্রতারকরা আগে থেকেই ওই নারীকে অনুসরণ করেছে। সুযোগ বুঝে টাকা নিয়ে সটকে পড়েছে। ভুক্তভোগী গ্রাহককে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে।’
বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ওই নারী বিকালে থানায় জিডি করেছেন। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। তিন প্রতারককে ধরার চেষ্টা চলছে।’