১৩৩ প্রতিষ্ঠানকে সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি

মত ও পথ ডেস্ক

সুগন্ধি চাল রপ্তানি। ফাইল ছবি

দেশের ১৩৩ প্রতিষ্ঠানকে ১৮ হাজার ১৫০ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা অনুযায়ী এবার ১০০ থেকে ৫০০ টন করে চাল রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমতির মেয়াদ কার্যকর থাকবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। অনুমতি দেওয়ার এ তথ্য জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার প্রধান আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে।

এক বছরের বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকার পর সুগন্ধি চাল রপ্তানির সুযোগ আবার উন্মুক্ত করেছে এ সরকার। গত ২২ জানুয়ারি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের খাদ্য পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ কমিটির সভায় সুগন্ধি চাল রপ্তানি উন্মুক্ত করার বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।

তবে এবার বেঁধে দেওয়া হয়েছে চাল রপ্তানির পরিমাণ ও ন্যূনতম দাম। এখন বছরে দেশ থেকে রপ্তানি করা যাবে ২৫ হাজার টন চাল। প্রতিকেজির ন্যূনতম দাম হবে ১ দশমিক ৬০ মার্কিন ডলার।

বাংলাদেশ থেকে ২০০৯-১০ অর্থবছরে সুগন্ধি চাল রপ্তানি শুরু হয়। ২০২২ সালে এসে প্রথমবার চাল রপ্তানি বন্ধ করা হয়। এরপর মাঝে কিছু অনুমতি দিলেও ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে সুগন্ধি চাল রপ্তানি বন্ধ করেছিল সরকার। তবে রপ্তানি শুরুর পর থেকে দ্রুত বেড়ে সুগন্ধি চাল বাংলাদেশি রপ্তানি ঝুড়িতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্য হয়ে উঠেছিল।

ড্যানিশ ফুডের হেড অব বিজনেস দেবাশীষ সিংহ বলেন, বাংলাদেশের সুগন্ধি চাল এখন বিদেশের অনেক দেশে ব্র্যান্ড প্রোডাক্ট। এটি কখনো চালু কখনো বন্ধ করে সরকার বাংলাদেশের বাজার নষ্ট করেছে। রপ্তানি বন্ধ থাকলে সব সময় দেশে উদ্বৃত্ত সুগন্ধি চাল থেকে যায়, চাষিরা দাম পায় না। গত কয়েক বছর সেটা হয়েছে। দেশে উপলক্ষ-অনুষ্ঠান ছাড়া এ চালের চাহিদা নেই।

তিনি বলেন, আমাদের রপ্তানির ঝুড়িতে সুগন্ধি চাল একটি জনপ্রিয় আইটেম। চাল না দিতে পারলে অনেক সময় অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়ে যায়। যে কারণে মাঝখানে গত কয়েক বছর কৃষিপণ্য রপ্তানি কমেছে।

দেশ থেকে প্রথম বছর ৬৬৩ টন সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়। পরের বছরগুলোতে রপ্তানির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১০ হাজার ৮৭৯ টনে উন্নীত হয়। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৮৬ লাখ, ২০২০-২১ অর্থবছরে ৮৫ লাখ এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫১ লাখ মার্কিন ডলারের সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছিল।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, দেশে বছরে গড়ে সুগন্ধি চাল উৎপাদন হয় ১৮-২০ লাখ টন। আর আগে বছরে গড়ে রপ্তানি হয়েছে ১০ হাজার টন। অর্থাৎ উৎপাদনের তুলনায় চালের রপ্তানির হিস্যা অনেক কম। যে কারণে চাল রপ্তানিতে খাদ্য নিরাপত্তার কোনো ঝুঁকি নেই বলে বারবার দাবি করে আসছেন রপ্তানিকারকরা।

এ পর্যন্ত বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ব্রুনেই, দক্ষিণ কোরিয়াসহ বিশ্বের ১৩০টির বেশি দেশে সুগন্ধি চাল রপ্তানি হয়েছে।

দেশে রপ্তানিযোগ্য সুগন্ধি চালের একটি তালিকা রয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে। চালগুলো হচ্ছে কালিজিরা, কালিজিরা টিপিএল-৬২, চিনিগুঁড়া, চিনি আতপ, চিনি কানাই, বাদশাভোগ, কাটারিভোগ, মদনভোগ, রাঁধুনিপাগল, বাঁশফুল, জটাবাঁশফুল, বিন্নাফুল, তুলসীমালা, তুলসী আতপ, তুলসী মণি, মধুমালা, খোরমা, সাককুর খোরমা, নুনিয়া, পশুশাইল, দুলাভোগ ইত্যাদি।

শেয়ার করুন