ইরানের বন্দরে রাসায়নিক বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানের বন্দর আব্বাসের কাছে শহীদ রাজয়ি বন্দরে রাসায়নিক পদার্থের বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ জনে। ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম ইরনা জানিয়েছে, শনিবার (২৬ এপ্রিল) ইরানের সবচেয়ে বড় বন্দরে এই বিস্ফোরণে আহত হয়েছে ৭০০ জনের বেশি মানুষ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

ইরানের সংকট ব্যবস্থাপনা সংস্থার মুখপাত্র হোসেইন জাফারি বিস্ফোরণের জন্য শহীদ রাজয়ি বন্দরে কনটেইনারে রাসায়নিকের দুর্বল সংরক্ষণকে দায়ী করেছেন। তিনি ইরানের আইএলএনএ বার্তা সংস্থাকে বলেছেন, বিস্ফোরণের কারণ ছিল কনটেইনারগুলোর ভিতরে থাকা রাসায়নিক পদার্থ।

জাফারি আরও বলেন, এর আগেও সংকট ব্যবস্থাপনার মহাপরিচালক এই বন্দর সফরকালে সতর্কতা জারি করেছিলেন এবং বিপদের সম্ভাবনার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

তবে ইরানি সরকারের একজন মুখপাত্র জানান, রাসায়নিক পদার্থ থেকেই বিস্ফোরণ হয়ে থাকতে পারে, তবে এখনও নির্দিষ্ট কারণ নির্ধারণ করা সম্ভব হয়নি।

শহীদ রাজয়ি বন্দর ইরানের রাজধানী তেহরানের দক্ষিণে এক হাজার কিলোমিটারের বেশি দূরে অবস্থিত। এটি ইরানের সবচেয়ে উন্নত কনটেইনার বন্দর বলে জানিয়েছে ইরনা। বন্দর আব্বাস শহরের ২৩ কিলোমিটার পশ্চিমে ও হরমুজ প্রণালির উত্তরে অবস্থিত এই কনটেইনার বন্দর। এ প্রণালি দিয়ে বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ তেল পরিবহণ করা হয়।

প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ঘটনাস্থলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে পাঠিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বন্দরে আগুন নেভানোর এবং তা ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।

বিস্ফোরণের কয়েক ঘণ্টা পরও রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত ফুটেজে দেখা যায়, বন্দরের ওপর বিশাল কালো ও কমলা ধোঁয়া উড়ছে। এছাড়া একটি অফিস ভবন দেখা গেছে যার দরজা উড়ে গেছে এবং কাগজপত্র ও ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। সেখানে জ্বলতে থাকা বহু কনটেইনারের আগুন নেভাতে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, বিস্ফোরণে কয়েক কিলোমিটার এলাকার মধ্যে অবস্থিত ভবনের জানালাগুলো ভেঙে পড়ে এবং প্রায় ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত কিশ দ্বীপেও বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।

ঘটনার পর হরমোজগান প্রদেশের রাজধানী শহর বন্দর আব্বাসে সব বিদ্যালয় ও অফিস রবিবার (২৭ এপ্রিল) বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক বছরে ইরানের জ্বালানি এবং শিল্প অবকাঠামোতে একের পর এক প্রাণঘাতী ঘটনা ঘটেছে। এগুলোর বেশিরভাগই শনিবারের বিস্ফোরণের মতো এবং এর জন্য অবহেলাকে দায়ী করা হয়েছে।

শহীদ রাজয়ি বন্দর এমন সময়ে এই বিস্ফোরণ ঘটে, যখন ওমানে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান তৃতীয় দফা পারমাণবিক আলোচনায় অংশ নিচ্ছিল। তবে দুই ঘটনার মধ্যে কোনও সংযোগের ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।

শেয়ার করুন