বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশেই বায়ুদূষণের অবস্থা ক্রমে খারাপ হচ্ছে, এটি নতুন নয়। নগরবিদদের মতে, ধুলোবালি হচ্ছে বায়ুদূষণের অন্যতম উৎস। এক সময় ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটার ধোঁয়াকে দায়ী করা হতো । কিন্তু পরে সে জায়গা দখল করে নেয় যানবাহন ও শিল্প-কলকারখানার ধোঁয়া। তাছাড়া গত কয়েক বছর ধরে বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্প ও ছোট-বড় আবাসন প্রকল্পের নির্মাণযজ্ঞ বাড়িয়েছে দূষণ। রাজধানীর সড়কেও ইট ভাঙা হয় এবং ইটের ক্ষুদ্র কণা বায়ুতে ছড়িয়ে পড়ে।
বায়ুদূষণ রোধের মূল দায়িত্ব রাষ্ট্রীয় সংস্থা পরিবেশ অধিদপ্তরের। দূষণ ঠেকাতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হলেও পরিবেশের উন্নয়নে সেগুলো যথেষ্ট নয়। পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বৈশ্বিক ও দেশীয় সংগঠনের বায়ুমান যাচাই-বিষয়ক সূচকে তাই বরাবরই পিছিয়ে থাকি আমরা। তাই রাজধানীর বায়ুদূষণ রোধে জরুরি ভিত্তিতে অবশ্যই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
এমন বাস্তবতায় বিশেষ করে দূষণের অন্যতম উৎস নির্মাণকাজের ধুলা নিয়ন্ত্রণে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। রাজধানীতে চলাচলকারী ফিটনেসবিহীন মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন থেকে অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া নির্গত হয়। এগুলো নিয়ন্ত্রণে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। তাছাড়া দূষণ কমাতে রাজধানীতে ব্যক্তিগত গাড়ি নিরুৎসাহিত করা দরকার। অবশ্য উন্নত গণপরিবহণব্যবস্থা গড়ে না উঠলে ব্যক্তিগত গাড়ির সংখ্যা কমবে না। দেশের অধিকাংশ শহর ও পৌরসভায় আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। এ কারণে আগুন দিয়ে বর্জ্য পোড়ানো হচ্ছে। এতে দূষণ বাড়ছে।
বস্তুত সারা দেশেই বায়ুদূষণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক পর্যায় পৌঁছেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীসহ সারা দেশের পরিবেশ সুরক্ষায় সমন্বিত পদক্ষেপের কোনোই বিকল্প নেই।