একমাসে ঢাকার শেয়ারবাজারের মূলধন কমেছে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক

শেয়ারবাজার
ফাইল ছবি

শেয়ারবাজারকে শক্তিশালী করতে টাস্কফোর্সের সুপারিশ বা প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনার প্রভাব দৃশ্যমান নয়। বরং বাজারে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। গত এক মাসে ঢাকার শেয়ারবাজারে প্রধান সূচক হারিয়েছে প্রায় ৩০০ পয়েন্ট। প্রতিদিন পুঁজি হারিয়ে হতাশ বিনিয়োগকারীরা। এমন অবস্থায় বাজারে আস্থা ফেরাতে সরকারের নীতিগত সহায়তা চান বাজার সংশ্লিষ্টরা।

শেয়ারবাজারে দীর্ঘ সময় ধরে পতনে বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা সংকটে রূপ নিচ্ছে। সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর একের পর এক বৈঠক ও আশ্বাসের পরও বাজার ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।

গত এক মাসে ১৪ কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে সূচকের পতন হয়েছে। প্রধান সূচক ডিইএসইএক্স হারিয়েছে ২৯৮ পয়েন্ট। এ সময় ডিএসইর বাজার মূলধনও কমেছে ২০ হাজার কোটি টাকার বেশি।

শেয়ারবাজারে অস্থিরতার জন্য বিএসইসির প্রধানসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করছেন বিনিয়োগকারীরা। তাদের দাবি, কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী ফোর্সড সেলের স্বীকার হয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। এতে তাদের লোকসানের পাল্লা ভারী হচ্ছে। সেই সঙ্গে বাড়ছে হতাশাও।

একজন বিনিয়োগকারী বলেন, ‘বাংলাদেশের পুঁজিবাজার আজ বন্দি হয়েছে এক নব্য স্বৈরাচারের আয়নাঘরে। আমাদের প্রথম দাবিই হলো মাকসুদ সাহেবের পদত্যাগ।’

পুঁজিবাজারের পরিস্থিতি উন্নয়নে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে আসছে বাজেটে কর ছাড়সহ বেশ কিছু প্রস্তাব সরকারের কাছে দিয়েছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। সরকারও বাজারে গতি ফেরাতে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধারে আন্তরিক বলে জানান তারা।

ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘তখন সাধারণ বিনিয়োগকারীরাও বিশ্বাস করা শুরু করবে যে সরকার বিনিয়োগকারীদের পক্ষে। যখনই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা দেখবে আমরা শুধু কথা বলছি না, কাজও করছি তখন আস্থা ফিরে আসবে।’

এক সময় দেশের শেয়ারবাজারে ৩০ লাখের বেশি সক্রিয় বিনিয়োগকারী ছিল। এখন তা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বিনিয়োগকারী ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়াতে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এগিয়ে আসার আহ্বান বিশ্লেষকদের।

এদিকে, সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবসে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে মূল্যসূচক ও লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। এসময়, ডিএসইর প্রধান সূচক ১৮ দশমিক ৭১ পয়েন্ট বেড়েছে। লেনদেন বেড়েছে প্রায় ৯ কোটি টাকা। শেয়ারদর বেড়েছে ৫৪ ভাগ কোম্পানির। এদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক কমেছে ৭ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট।

মঙ্গলবার দিনের শুরু থেকেই ইতিবাচক ঢাকার শেয়ারবাজার।প্রথম ৫ মিনিটেই প্রধান সূচক বাড়ে ১০ পয়েন্ট। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় সূচকের উত্থান পতন। দিনশেষে ডিএসইএক্স সূচক ১৮ দশমিক ৭১ বেড়ে অবস্থান করছে ৪ হাজার ৭৯৫ পয়েন্টে।

সূচকের সঙ্গে ডিএসইতে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণও। এদিন মোট লেনদেন হয় ২৯৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা। আগের দিনের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে ৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা।

হাতবদলে অংশ নেওয়া ৩৯০টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ২১১৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। কমেছে ১০৪টি এবং অপরিবর্তিত ৭৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দর।

সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের তালিকায় প্রথম ওরিয়ন ইনফিউশন, দ্বিতীয় স্কয়ার ফার্মা, তৃতীয় অবস্থানে বিচ হ্যাচারি।

শতাংশের দিক থেকে দর বৃদ্ধির তালিকায় প্রথম ফুওয়াং ফুড, দ্বিতীয় সমতা লেদার, তৃতীয় অবস্থানে মিডল্যান্ড ব্যাংক।

অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক সূচক ৭ দশমিক ৯৮ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১৩ হাজার ৩৭০ পয়েন্টে। লেনদেন ৬ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার।

শেয়ার করুন