জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের অপসারণ ও সব পক্ষের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে রাজস্ব খাতের সংস্কার দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চেয়ারম্যানের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত ঘর ফিরবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা।
শনিবার (২৮ জুন) এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সকাল থেকে এনবিআরের ঢাকা কার্যালয়ের কর্মকর্তাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের কর্মকর্তারা রাজধানীর এনবিআর ভবনের সামনে সমবেত হন।
এদিকে, এনবিআরের মূল ফটক বন্ধ করে দিয়ে ভেতরে অবস্থান নিয়েছে বিজিবি, পুলিশ, র্যাব ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা। এনবিআর ভবনের আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে কাউকে ভবনে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
ঢাকাসহ সারা দেশ থেকে আগত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এনবিআর ভবনের সামনে ও ভবন সংলগ্ন ফুটপাত-রাস্তায় বসে পড়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গাড়ি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জটলায় আগারগাঁও সড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ, এনবিআর চেয়ারম্যান সমস্যার সমাধান না করে মিথ্যাচার করছেন। তারা বলছেন, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত তারা আগারগাঁও ছেড়ে যাবেন না।
আন্দোলনরত এনবিআরের একজন কর্মকর্তা জানান, আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা কাউকে ভেতরে যেতে দিচ্ছে না, আবার বেরও হতে দিচ্ছে না। বাইরে এনবিআরের অনেক বয়স্ক এবং অসুস্থ মহিলা আছে যারা ঢুকতে না পেরে গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সকাল ১০টার আগে আইডি কার্ড দেখিয়ে অনেকেই প্রবেশ করেছেন।
এ সময় দফা এক দাবি এক এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগ স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। এনবিআর ভবনের সামনে ফুটপাতে মাইকে কর্মকর্তাদের বক্তব্য দিতেও দেখা যায়।
তাদের মধ্যে একজন বলেন, এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ ছাড়া ঘরে ফিরবো না। চিহ্নিত দুর্নীতিবাজ কেউ এনবিআরে চেয়ারম্যান হতে পারবে না। আমরা সরকারি কর্মচারী, আমরা শান্তি চাই।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামের দুটি বিভাগ করে গত ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর প্রতিবাদে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছেন রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের আন্দোলনের মধ্যে সরকার পিছু হটে। বলা হয়, অধ্যাদেশ বাস্তবায়নে এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।
এরপর কাজে যোগ দিলেও আন্দোলনকারীরা এনবিআর চেয়ারম্যানের পদত্যাগের দাবিতে অটল থাকেন এবং সংস্থার কার্যালয়ে তাকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেন। পরে সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় অফিসে ফেরেন এনবিআর চেয়ারম্যান।