রাজার বাধায় প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হলো না থাইল্যান্ডের রাজকুমারী উবলরত্না সিরিভাধানার। তার নির্বাচনে দাঁড়ানোর ওপর দেয়া নিষেধাজ্ঞা মেনে নিয়েছে তার রাজনৈতিক দল।
আজ শনিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়, উবলরত্না এই পদের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করার মাত্র একদিনের ব্যবধানে এ নাটকীয় পরিবর্তন ঘটলো। বিবিসি, এএফপি।
বিবৃতিতে বলা হয়, থাই রাকসা চার্ট পার্টি রাজপরিবারের নির্দেশ মেনে নিয়েছে। রাজা ও রাজপরিবারের সকলের কথা বিনয়ের সঙ্গে মেনে নিয়েছে দলটি।
তবে এমন কাণ্ডে নাখোশ রাজকুমারী উবলরত্না। ইন্সট্রাগ্রাম পোস্টে তিনি বলেন, আমি রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে সকল খেতাব ত্যাগ করেছি। বর্তমানে বসবাস করছি সাধারণ থাই নাগরিক হিসেবে। আমি সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমার অধিকার চাই।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে ব্যতিক্রমী নজির সৃষ্টি করেন থাইল্যান্ডের রাজার বোন রাজকুমারী উবলরত্না সিরিভাধানা। ৬৭ বছরের রাজকুমারী বর্তমান রাজা মাহা ভাজিরালংকর্নের বড় বোন এবং প্রয়াত রাজা ভূমিবল আদুলিয়াদেজের প্রথম সন্তান। নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার দলের একজন প্রার্থী হিসেবে রাজকুমারী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন।
আসছে ২৪ মার্চ থাইল্যান্ডে জাতীয় নির্বাচন। থাইল্যান্ডের সামরিক জান্তা নেতা প্রায়ুথ চান-ওচা এতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ২০১৪ সালের মে মাসে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন প্রায়ুথ।
১৯৩২ সাল থেকে থাইল্যান্ডে সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থা চালু হলেও জনগণের কাছে রাজপরিবার অত্যন্ত সম্মানিত এবং বেশ প্রভাবশালী। বিশেষ করে কোনো রাজনৈতিক সংকট সমাধান রাজা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। যদিও দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য অনুযায়ী থাই রাজপরিবার রাজনীতির বাইরেই থাকে। অতীতের নজির ভেঙে রাজনীতিতে এসে রাজকুমারী দেশটির বিশৃঙ্খল রাজনৈতিক পরিবেশের উন্নতি ঘটাতে চেয়েছিলেন।
রাজকুমারী উবলরত্না ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি থেকে গণিত ও জৈব-রয়াসনে স্নাতক ডিগ্রি গ্রহণের পর ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া থেকে গণস্বাস্থ্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নেন। ১৯৭২ সালে সহপাঠী আমেরিকার পিটার জেনসেনকে বিয়ে করতে নিজের রাজকীয় মর্যাদা বিসর্জন দেন তিনি। ২০০১ সালে থাইল্যান্ডে ফিরে রাজ দায়িত্ব পালন করা শুরু করেন; যদিও তিনি আর কখনো পূর্ণ রাজকীয় মর্যাদা ফিরে পাননি। তরুণদের মাদক থেকে দূরে রাখতে তার আন্দোলন ‘টু বি নাম্বার ওয়ান’ এর জন্যও তিনি ব্যাপক সমাদৃত।