আজ রোববার অমর একুশে গ্রন্থমেলার দশম দিন। গ্রন্থমেলা চলে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। মেলায় আজ নতুন বই এসেছে ৯০টি।
বিকেল ৪টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় কথাশিল্পী অমিয়ভূষণ মজুমদার : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মহীবুল আজিজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন হোসেনউদ্দীন হোসেন, মাহবুব সদিক এবং হরিশংকর জলদাস। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেলিনা হোসেন। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
প্রাবন্ধিক বলেন, এক প্রবল দায়বদ্ধ লেখক অমিয়ভূষণ মজুমদার। আদিতে ছিলেন পূর্ববঙ্গের পাবনা’র মানুষ, স্থিত হলেন উত্তরবঙ্গের কোচবিহারে। রাজনীতির নিয়তিনির্দিষ্ট অধিকাংশের মতন কলকাতারও নয়, হয়ে পড়েন কলকাতা ছাড়িয়ে আরও দূরের জন। আর সেখান থেকেই দারুণ দার্ঢ্য নিয়ে অধিষ্ঠিত হন কেন্দ্রে, পরিণত হন বাংলা সাহিত্যের অনিবার্য লেখক। তাঁর সাহিত্য-বিচারের ক্ষেত্রে কেন্দ্রিকতা-প্রান্তিকতা প্রভৃতি হিসেবকে সম্পূর্ণ বাইরে রাখতে হয় যখন তিনি কলকাতাকে অভিহিত করেন ‘ঔপনিবেশিক শহর’ রূপে। সুদীর্ঘ অতিক্রান্ত কালের পরেও সে-শহর ঔপনিবেশিক শক্তিসৃষ্ট শহর শুধু নয় তা উপনিবেশিত দৃষ্টিভঙ্গির অতিরেক বৃহত্তর মূল্যে উত্তীর্ণ হতে না পারায় তাকে সংকীর্ণ চৌহদ্দি বলে মনে করতেন অমিয়ভূষণ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, অমিয়ভূষণ মজুমদারের উপন্যাসের একটা বড় পরিপ্রেক্ষিত হলো নরনারীর সম্পর্কের জটিলতা কিন্তু সে-জটিলতার সামাজিক ব্যাকরণটিকে বাদ দেন না তিনি। বাংলা কথাসাহিত্যের সা¤্রাজ্যের অসামান্য অধীশ্বর অমিয়ভূষণ মজুমদারের ‘হিসাব-নিকাশ উলটেপালটে দেওয়া’ মানুষদের জীবনের ইতিহাসের হিসাব ঠিক-ঠিক লিপিবদ্ধ করে রেখে গেছেন; সে কারণেই তিনি স্মরণীয়।
সভাপতির বক্তব্যে সেলিনা হোসেন বলেন, জন্মশতবর্ষে অমিয়ভূষণ মজুমদারকে স্মরণ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রান্তবর্তী মানুষের অন্তর্গত বেদনা, সংগ্রাম ও সংকল্পের দায় তিনি তাঁর কলমের সঙ্গে অঙ্গীকৃত করে নিয়েছেন। বাংলা সাহিত্যের ভিন্ন ধারার কথাশিল্পী হিসেবে অমিয়ভূষণ মজুমদার পাঠকের কাছে অনাগতকালে উপস্থাপিত হবেন ভিন্নতর ব্যঞ্জনায়।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন প্রকাশিত গ্রন্থ বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন কবি অসীম সাহা, রেজাউদ্দীন স্টালিন, মীম নোশিন নাওয়াল খান, মাজহার সরকার এবং পারভেজ হোসেন।
কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ করেন মুহম্মদ নূরুল হুদা এবং সঞ্জীব পুরোহিত। আবৃত্তি পরিবেশন করেন মীর মাসরুর জামান রনি এবং লাবণ্য শিল্পী। সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী আলম দেওয়ান, রণজিত দাস বাউল, মমতা দাসী বাউল, লতিফ শাহ এবং মোঃ আনোয়ার হোসেন। যন্ত্রাণুষঙ্গে ছিলেন বেণু চক্রবর্তী (তবলা), মো. খোকন (বাঁশি), মো. হাসান মিয়া (বাংলা ঢোল), নওফেল বাদশা (দোতারা)।
আগামীকালের অনুষ্ঠানসূচি :
আগামীকাল ১১ ফেব্রুয়ারি সোমবার অমর একুশে গ্রন্থমেলার ১১তম দিন। মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।
বিকেল ৪টা গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে নৃত্যাচার্য বুলবুল চৌধুরী : জন্মশতবর্ষ শ্রদ্ধাঞ্জলি শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন অনুপম হায়াৎ।
আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন আমানুল হক, লুভা নাহিদ চৌধুরী এবং শিবলী মহম্মদ। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন কামাল লোহানী। সন্ধ্যায় রয়েছে কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, কবিতা-আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।