ভারত-সৌদি আরব সন্ত্রাসবাদ দমন ও এর পৃষ্ঠপোষকদের বিরুদ্ধে যৌথভাবে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে। সন্ত্রাসবাদকে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে তারা।
আজ বুধবার ভারত সফররত সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের পর এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
দিল্লির হায়দরাবাদ হাউসে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে বিনিয়োগ, পর্যটন, আবাসন, সংস্কৃতি ও মিডিয়া বিষয়ক পাঁচটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।
বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
নরেন্দ্র মোদি সাংবাদিকদের বলেন, কৌশলগত দিক বিবেচনায় সৌদির সঙ্গে আমাদের সামরিক সহায়তা বৃদ্ধি ও সম্প্রাসরণ বিষয়ে সফল আলোচনা হয়েছে।
পুলওয়ামা হামলার বিষয়ে ইঙ্গিত করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, এ বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি যে, সন্ত্রাসবাদকে যারা সমর্থন ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয়, যে কোনো মূল্যে তাদের প্রতিহত করতে হবে। সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলোর সকল অপচেষ্টা রুখতে হবে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিচ্ছিন্নতাবাদ ও সন্ত্রাসবাদের ভয়াল থাবা থেকে মুক্ত রাখতে শক্তিশালী একটি কর্মকৌশল প্রয়োজন। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, সৌদি আরব ও ভারত এ বিষয়ে অভিন্ন মত পোষণ করে ।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান বলেন, বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সন্ত্রাসীদের দমনের বিষয়টি আমাদের উভয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বন্ধু দেশ ভারতকে আমি বলতে চাই, সন্ত্রাসীদের দমনে আমরা ভারতকে সব ধরনের সহায়তা করব। এর জন্য তথ্যপ্রদানসহ যাবতীয় সব সহযোগিতা আমরা দেব।আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় আমরা উভয় দেশ মিলেমিশে কাজ করব।
সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুবরাজের এ শক্ত অবস্থানকে পাকিস্তানের প্রতি প্রচ্ছন্ন চাপ হিসেবেই দেখছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।
সৌদি আরবের সঙ্গে ভারতের সুসম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে নরেন্দ্র মোদি বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের ২৭ লাখ মানুষ বসবাস করে। তাই শান্তি ও নিরাপত্তার বিষয়টি উভয়দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সৌদি সরকার ভারতে তাদের ব্যবসায়িক বিনিয়োগ বাড়াবে জানিয়ে নরেন্দ্র মোদি বলেন,দুই দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেওয়ার ব্যাপারে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছি।
সন্ত্রাসী তৎপরতা ঠেকাতে সমুদ্র নিরাপত্তা, সাইবার সিকিউরিটিসহ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে যৌথ অঙ্গীকার করেছে সৌদি ও ভারত।
ভারতের সঙ্গে সৌদির বন্ধুত্ব অনেক পুরনো জানিয়ে সৌদি যুবরাজ বলেন, আমাদের বন্ধুত্বের ইতিহাস অনেক অনেক পুরনো, এ সম্পর্ক আমাদের রক্তে প্রবাহমান। বিগত ৫০ বছরে এ সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে। অনেক বিষয়েই আমাদের যৌথ স্বার্থ রয়েছে। কৃষি, জ্বালানি, প্রযুক্তি, সামাজিক উন্নয়ন সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে উভয় দেশ নতুন কৌশল ও কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেদ্র মোদির সৌদি সফর স্মরণ করিয়ে সৌদি প্রিন্স বিন সালমান বলেন, ২০১৬ সালের প্রধানমন্ত্রীর সফরের পরে অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে।
সৌদি আরব ভারতে ৪৪ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে, আমাদের আরও ১০০ বিলিয়ন বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। আমরা চাই এই বিনিয়োগ উভয় দেশের জন্য লাভজনক হোক।