বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ করতে আরও আড়াই বছরের বেশি সময় চায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এজন্য তারা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চিঠিও দিয়েছে। এতে তারা পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করতে ২০২১ সালের ২৬ জুন পর্যন্ত সময় চেয়েছে।
২০১৪ সালের জুন মাসে পদ্মা সেতুর মূল অবকাঠামো নির্মাণের চুক্তি সই হয়। সে অনুযায়ী ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর কাজ শেষ করার কথা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে কাজ হয়েছে প্রায় ৭০ শতাংশ।
সংবাদমাধ্যমে শেয়ার বিজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি ফেব্রুয়ারিতে এ-সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে। এতে তারা বাকি কাজ শেষ করতে আরও ৩১ মাস সময় চেয়েছে।
পদ্মা সেতুর ব্যবস্থাপনা পরামর্শকদের মাসিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনেও এ তথ্য উঠে এসেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রেন্ডাল অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস।
পরামর্শকদের মাসিক মূল্যায়ন প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মূল সেতুর নির্মাণকাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৩ দশমিক ২ শতাংশ। যদিও গত নভেম্বরে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা ছিল। নির্ধারিত সময়ের দুই মাস পরও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ পিছিয়ে রয়েছে কাজ।
অবশ্য নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার আগেই বাড়তি ছয় মাস সময় দেওয়া হয়েছিল। সে অনুযায়ী চলতি বছরের জুনে কাজ শেষ হওয়ার কথা। এরই মধ্যে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আবারও বাড়তি সময় চাইল। তবে সেতু বিভাগ প্রস্তাব মেনে নেয়নি। বাড়তি সময় চাওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, নকশা জটিলতার কারণে সেতুর নির্মাণকাল পিছিয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ঠিকাদারকে অতিরিক্ত ১৮০ দিন সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে বর্ধিত সময়েও তারা কাজ শেষ করতে পারবে না বলে জানিয়েছে। ৩১ মাস সময় চেয়েছে চায়না মেজর ব্রিজ। তবে তাদের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়নি। এত সময় লাগার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
‘তারা এখনও ব্যাখ্যা দেয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ব্যাখ্যা পেলে সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে প্রকল্পটির বর্ধিত মেয়াদকাল অনুমোদন করা হবে,’ বলেন প্রকল্প পরিচালক।
ব্যবস্থাপনা পরামর্শকের প্রতিবেদন মতে, পদ্মা সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে জানুয়ারি পর্যন্ত ১৭টির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। ১৪টি পিলারের নির্মাণকাজ চলছে। এছাড়া পাঁচটি পিলারের ২১টি পাইল সম্পন্ন হয়েছে। ৫৬টি পাইল নির্মাণ এখনও বাকি রয়েছে।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল অবকাঠামো নির্মাণের চুক্তি মূল্য ধরা হয়েছে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। নদী শাসনের চুক্তি মূল্য আট হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা। আর পুরো প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকা। যদিও বাস্তবায়ন বিলম্বে সেতুটির ব্যয় আরও বেড়ে যাবে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।