কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় যৌতুকের দাবিতে প্রজ্ঞা মোস্তফা (২৬) নামে এক গৃহধূকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছেন তার স্বামী দেলোয়ার হোসেন মাহতাব (৩২)
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের উত্তর চাঁনপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘাতক স্বামী দেলোয়ার হোসেন মাহতাবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। করিমগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. মুজিবুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
নিহতের পরিবারের লোকজন জানান, মাত্র বছর দেড়েক আগে করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল উত্তর চাঁনপুর গ্রামের মৃত ইমাম উদ্দিনের ছেলে দেলোয়ার হোসেন মাহতাবের সঙ্গে বিয়ে হয় ইটনা উপজেলার লাইমপাশা গ্রামের বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক আহসান মোস্তফার মেয়ে প্রজ্ঞা মোস্তফার। বিয়ের মাস পার হতে না হতেই বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার দাবিতে প্রজ্ঞার ওপর অত্যাচার ও নির্যাতন শুরু করেন দেলোয়ার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে যৌতুকের টাকার জন্য স্ত্রীকে বকাঝকা করেন দেলোয়ার। একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে জবাই করে প্রজ্ঞা মোস্তফাকে হত্যা করেন দেলোয়ার হোসেন মাহতাব।
নিহত প্রজ্ঞা মোস্তফা কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের সমাজকল্যাণ বিষয়ে অনার্স ফাইনাল ইয়ারের ছাত্রী ছিলেন। ছয় বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। মাত্র তিন মাস বয়সী একটি শিশু সন্তান রয়েছে প্রজ্ঞা মোস্তফার।
করিমগঞ্জ থানা পুলিশের ওসি মো. মুজিবুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতার করা হয় ঘাতক দেলোয়ারকে। উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি। যৌতুকের জন্য স্ত্রী হত্যার কথা স্বীকার করেছে দেলোয়ার হোসেন মাহতাব।
প্রজ্ঞার বাবা আজমিরিগঞ্জ এবিসি সরকারি মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আহসান মোস্তফা বলেন, বিয়ের পর থেকে দেলোয়ারের আসল চেহারা টের পাই। সে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আমার মেয়ের ওপর অকারণে নির্যাতন করতো। আমি আমার মেয়ের হত্যাকারীর ফাঁসি চাই।
এদিকে, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপতাল মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় করিমগঞ্জ থানায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন।