কাশ্মীরের পাঁচ বিচ্ছিন্নতাবাদীকে হত্যার কথা জানিয়েছে ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনী। বিদ্রোহীদের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের মাঝে পড়ে এক বেসামরিক নাগরিকও নিহত হয়েছেন।-খবর আরব নিউজের
ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রাজেশ কালিয়া বলেন, বন্দুকযুদ্ধ হওয়ার পর ১২ বছর বয়সী একটি শিশু ও দুই বিদ্রোহীর মরদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
কাশ্মীরের উত্তর বানদিপোড়া জেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলীয় বারামুল্লা জেলায় অভিযানের সময় আরও দুই বিদ্রোহী নিহত হন।
বৃহস্পতিবার সোপোর এলাকায় বিদ্রোহীদের গ্রেনেড হামলায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
কাশ্মীরকে নিজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে ভারত জোরালো দাবি করে আসলেও উপত্যকাটি আসলে একটি অধিকৃত অঞ্চল। ১৯৪৭ সাল থেকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে এ নিয়ে দ্বন্দ্ব লেগে আছে।
হাতে গোনা কয়েকশ বিদ্রোহীর হাত থেকে রেহাই পেতে কাশ্মীরে সাত লাখের বেশি ভারতীয় সেনা মোতায়েন করা আছে। প্রতিবেশী পাকিস্তান বিদ্রোহীদের ঠাঁই দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ ভারতের।
এই বিশাল সংখ্যক সেনাবাহিনী দিয়ে ভূস্বর্গের লোকজনকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। যদিও ভারত এমন দাবি অস্বীকার করছে।
কাশ্মীরিরা স্বাধীনভাবেই থাকতে পছন্দ করেন। তবে তাদের কেউ কেউ পাকিস্তানের সঙ্গে একীভূত হয়ে যাওয়ার কথাও বলছেন।
ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সাল থেকে অহিংস আন্দোলন করে আসছে কাশ্মীরবাসী। কিন্তু ১৯৮৮ সাল থেকে সেখানে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দাবিতে সশস্ত্র বিদ্রোহী শুরু হয়।
এখন পর্যন্ত ৮০ হাজার কাশ্মীরি হত্যার শিকার হয়েছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও আট হাজার। গ্রেফতার, নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বেশুমার।
যদি উপত্যকাটির লোকজনকে কেউ জিজ্ঞেস করেন, তারা বলবে, কাশ্মীরের বেসামরিক লোকজনের সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনী যুদ্ধ করছে।
২০০৮ সাল থেকে বিক্ষোভকারীদের ওপর নিয়মিতভাবে তাজা ও ছররা গুলি ছুড়ে আসছে সেনারা। এভাবে কাশ্মীরিরা এক ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে শুরু করেন। পুরো উপত্যকাটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে।
সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, কাশ্মীরে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর ভারতীয় রাষ্ট্রের সহিংসতার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কখনোই নিন্দা করেনি। আর এভাবেই প্রদেশটিতে কাঠামোগত সহিংস পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে সেখানে যা ঘটছে, তা মুছে ফেলা হচ্ছে।