সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও আইটি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহী

ডেস্ক রিপোর্ট

বাংলাদেশে শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও আইটি খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুরের ব্যবসায়ীরা। একই সাথে তারা উচ্চ, মধ্যম ও নিম্ন পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতা করতে চায় বলে জানিয়েছে।
সফররত সিঙ্গাপুরের ২৫ সদস্যের বাণিজ্য প্রতিনিধিদল আজ চট্টগ্রামে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারস্থ বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি (সিসিসিআই)সহ অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ও স্টেকহোল্ডারদের সাথে মতবিনিময় তারা এসব কথা বলেন।
সিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশনের (এসবিএফ) চেয়ারম্যান টিও সিয়ং সেং, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম. আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী, চেম্বার সহসভাপতি সৈয়দ জামাল আহমেদ, তুরস্কের অনারারী কনসাল সালাহ্উদ্দীন কাসেম খান ও উইম্যান চেম্বারের সহ-সভাপতি মুনাল মাহবুব বক্তব্য রাখেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমোডর জুলফিকার আজিজ বন্দর সম্প্রসারণ বিষয়ে তথ্য চিত্র উপস্থাপন করেন।
সিঙ্গাপুর বিজনেস ফেডারেশনের (এসবিএফ) চেয়ারম্যান টিও সিয়ং সেং বলেন, বাংলাদেশে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইটি খাতে সিঙ্গাপুর বিনিয়োগে আগ্রহী। উচ্চ, মধ্যম ও নি¤œ পর্যায়ে ব্যবস্থাপনা ও দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রশিক্ষণসহ সার্বিক সহযোগিতা করবে সিঙ্গাপুর। এছাড়া ব্লু ইকনোমি, পাওয়ার, অবকাঠামো উন্নয়ন, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন ও বাণিজ্য সম্প্রসারণে সিঙ্গাপুর কাজ করতে বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন,সিঙ্গাপুর বাংলাদেশের বেসরকারী খাতে বিনিয়োগের প্রয়োজনে আগামীতে সহযোগিতা প্রদান করবে। আর্থিক খাতে দক্ষিণ এশিয়ায় বিনিয়োগের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে সিঙ্গাপুরের।বন্দরের কারণে চট্টগ্রাম বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান বলেও উল্লেখ করেন টিও সিয়ং সেং।
আমিনুল ইসলাম চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রবেশদ্বার উল্লেখ করে বলেন,সকলের অবদানের কারণে এদেশের প্রতিনিয়তঃ প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন সাধিত হচ্ছে।তিনি আগামী দিনের ব্যবসা-বাণিজ্য নলেজ বেইজড্ এর মাধ্যমেই সম্পাদিত হবে বলে মন্তব্য করে এক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতার প্রশংসা করে তাদের সাথে ব্যবসায়ীদের কাজ করার উপর গুরত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন,বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকার ব্যবসাবান্ধব আইন প্রনয়ন করেছে।তিনি ওয়ান স্টপ সার্ভিস প্রদানসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা,বাংলাদেশ তথা চট্টগ্রাম ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের চলমান এবং ভবিষ্যত বিভিন্ন প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন।
চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম চট্টগ্রামকে স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলা, চট্টগ্রাম, মংলা, পায়রা বন্দরের উন্নয়ন এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে সিঙ্গাপুরের বিশেষজ্ঞ সহায়তা ও বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। তিনি চিকিৎসা প্রার্থী,ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের জন্য চট্টগ্রামে সিঙ্গাপুরের ভিসা সেন্টার ও বিভিন্ন হাসপাতালের বুথ স্থাপনের অনুরোধ জানান।
মাহবুবুল আলম যোগাযোগের সুবিধার্থে ঢাকা-চট্টগ্রাম-সিঙ্গাপুর বিমান চলাচল চালু করা, সরকারি পর্যায়ে জনশক্তি রপ্তানিতে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন এবং এক্ষেত্রে সিঙ্গাপুরের প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপনের উপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে সিঙ্গাপুরের মাধ্যমে অন্যান্য দেশে বাংলাদেশী পণ্য রপ্তানি করতে প্রতিনিধিদলের প্রতি আহবান জানান।
সভাশেষে প্রতিনিধিদলের সাথে বিভিন্ন সেক্টরের বিজনেস ম্যাচিং সেশন অনুষ্ঠিত হয় এবং তারা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার এক্সিবিশন হল, লুব-রেফ ও পিএইচপি গ্রুপ পরিদর্শন করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে