জনসন অ্যান্ড জনসনের পাউডার থেকে ছড়িয়েছে ক্যানসার। মার্কিন ওই বহুজাতিক সংস্থার এই অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার পরই সংস্থাকে ৪৭০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত।
অভিযোগকারী ২২ জন মহিলা ও তাঁদের পরিবারকে ওই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আমেরিকার মিসৌরির একটি আদালতের এক জুরি। অভিযোগ, ওই কোম্পানির ট্যালকম পাউডার ও বেবি পাউডারে রয়েছে অ্যাসবেসটসের মতো ক্ষতিকারক পদার্থ। তা থেকেই ডিম্বাশয়ের ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। এমনকি ছয় জন মহিলার মৃত্যও হয়েছে ক্যানসারের কারণে।
আদালতে গত ছয় সপ্তাহ শুনানি চলছে এই মামলার। প্রাথমিক ভাবে ৫৫ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে জনসন অ্যান্ড জনসনকে নির্দেশ দিয়েছেন মিসৌরির সেন্ট লুই আদালত। এ ছাড়াও ৪১৪ কোটি ডলার শাস্তিমূলক জরিমানা হিসেবে ধার্য করা হয়েছে।
সংস্থার দাবি, কয়েক দশকের গবেষণার পর এই পাউডার যে সুরক্ষিত তা বোঝা গিয়েছে। জনসন অ্যান্ড জনসনের কথায়, তারা আদালতের রায়ে অত্যন্ত হতাশ এবং রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন জানানোর পরিকল্পনা করছে।
এদিক, সবমিলিয়ে ওই সংস্থার বিরুদ্ধে মোট নয় হাজার মামলা আদালতে জমা পড়েছে। শিশুদের জন্য জনসনের তৈরি পাউডারের বিরুদ্ধেও মামলা রয়েছে। অভিযোগকারীদের আইনজীবীরা বলেছেন, জনসনের ট্যালকম পণ্য ব্যবহারের ঝুঁকি সম্পর্কে গ্রাহকদের সচেতন করতে ব্যর্থ হয়েছে।
অন্যদিকে জনসনের আইনজীবীদের দাবি, সংস্থার ট্যালকম পাউডার নিরাপদ এবং পণ্যে ক্যানসার হওয়ার মতো ক্ষতিকারক কোনও উপাদান নেই। একই সঙ্গে আদালতের বিচারপ্রক্রিয়া অন্যায্য বলেও দাবি করেছে সংস্থাটি।
২০০৯ ও ২০১০ সালে মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন জনসন অ্যান্ড জনসন-সহ আরো বেশ কয়েকটি কোম্পানির পাউডারের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা শুরু করে।অভিযোগকারী এক মহিলার আইনজীবী বলেন, ৪০ বছর ধরে জনসন অ্যান্ড জনসন ট্যালকম পাউডারের ব্যবসা করছে। তাদের পণ্যে ক্যান্সারের ঝুঁকির সতকর্তা উল্লেখ করা উচিৎ ছিল। কিন্তু তা করা হয়নি।
সংস্থার দাবি, নারীদের যৌনাঙ্গে ট্যালকম পাউডার ব্যবহারের কারণে ওভারিয়ান ক্যানসার তৈরির ঝুঁকি রয়েছে বলে তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তবে তাদের এই আশঙ্কা গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি। তবে জনসনের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত যতগুলো মামলা হয়েছে তার মধ্যে এই ক্ষেত্রেই আদালত তাদের সর্বোচ্চ পরিমাণ ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে।