বালাকোটে ভারতের লক্ষ্যবস্তু ভুল ছিল: অস্ট্রেলিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

বালাকোট
ভারতীয় বিমান বাহিনী বালাকোটে জইশ-ই-মুহাম্মদের শিবির গুঁড়িয়ে দেয়ার দাবি করলেও সেখানে জইশ-এর মাদ্রাসা ভবন এখনও অক্ষত অবস্থায় আছে। ছবি : সংগৃহিত

পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোট এলাকায় হামলা নিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। ভারত দাবি করেছে, পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণরেখায় (লাইন অব কন্ট্রোল) বালাকোটে জইশ-ই-মুহাম্মদসহ তিনটি জঙ্গি স্থাপনা তারা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। অস্ট্রেলীয় স্ট্র্যাটিজিক পলিসি ইনস্টিটিউট (এএসপিআই) বলছে, স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, বালাকোট এলাকায় ভারতের লক্ষ্যবস্তু ভবনগুলো হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

অগ্নিকাণ্ডের পরদিনই ইউরোপীয় স্পেস স্যাটেলাইট ছবি প্রকাশ করে। ওই ইমেজে দেখা যায়, ভবনের ছাদগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি।

এএসপিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্যাটেলাইট ইমেজে দেখা গেছে, কম বিস্ফোরক ভর্তি একটি অস্ত্র ভবনগুলোর কিছুটা ক্ষতি করতে পারে।

এএসপিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়, খুবই স্পষ্ট ওই স্যাটেলাইট ছবিতে দেখা গেছে, লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে তারা ব্যর্থ হয়।

লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে না পারার কারণও ব্যাখ্যা করা হয় ওই প্রতিবেদনে। বলা হয়, স্পাইস ২০০০ বোমাগুলোর নিশানা নির্ধারণ ঠিক ছিল না। এ কারণে এগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারেনি। এগুলো নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু থেকে ৩৩ মিটার ওপরে ছোড়া হয়।

প্রতিবেদনে দেওয়া আরও একটি ব্যাখ্যা হলো, লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে না পারার আরও একটি কারণ হলো, হামলার জন্য ফ্রেঞ্চ জেট, ইসরায়েলি অস্ত্র এবং ইউএস জিপিএস ব্যবহার করা হয়। এগুলো ভারতের পুরোনো তথ্যভিত্তিক নকশা অনুযায়ী চলে।

ভারতের বেশ কয়েকজন নেতার দাবি, বালাকোটের হামলায় পাকিস্তানে জঙ্গি দল জইশ–ই–মুহাম্মদ অধ্যুষিত বেশ কিছু এলাকায় বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। তবে ভারতীয় বিমানবাহিনী হতাহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়নি। তারা বলছে, সব লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে তিনটার দিকে সীমানা পেরিয়ে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হামলা চালিয়েছিল ভারতের বিমানবাহিনী। ভারতের দাবি, ২১ মিনিটের ওই হামলায় মিরেজ ২০০০ থেকে ১০০০ কেজি ওজনের বোমা জঙ্গিগোষ্ঠীর প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে আঘাত হানে। বিশেষ বোমা ফেলে ধ্বংস করা হয় জইশ-ই-মুহাম্মদ, হিজবুল্লাহ মুজাহিদীন ও লস্কর-ই-তাইয়েবার ঘাঁটি। নয়াদিল্লির দাবি, ওই হামলায় পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মুহাম্মদের বড় ঘাঁটি গুঁড়িয়ে গেছে। নিহত হয় ৩০০ জঙ্গি।

দুই দেশের সর্বশেষ সংকটের শুরু ১৪ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পুলওয়ামায় দেশটির আধা সামরিক সিআরপিএফের গাড়িবহরে আত্মঘাতী হামলায় ৪০ জনের বেশি জওয়ান নিহত হয়। পাকিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মুহাম্মদ এ হামলার দায় স্বীকার করে। এ ঘটনার ১২ দিন পর ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোরে পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বালাকোটে বিমান হামলা চালায় ভারত।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে