রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও সব আর্থিক প্রতিষ্ঠান সরকার এক ভবনে নিয়ে আসতে চায়। এ জন্য ২৫তলা ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ভবনের নাম হবে ব্যাংক ভবন।
জানা যায়, ভবনের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র বর্তমান কর্মসংস্থান ব্যাংক ও সাবেক দৈনিক বাংলা ভবনের স্থানটি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশিত প্রকল্প হিসেবে শিগগিরই এ কাজ শুরু হবে। অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে এক বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় করণীয়ও নির্ধারণ করা হয়েছে।
সূত্র মতে, নতুন এ ভবনে রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক, অগ্রণী এসএমই ফাইনান্স কোম্পানি, কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংক, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক এবং বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক আসছে। যেসব বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিজস্ব ভবন আছে, সেসব ব্যাংক নিজস্ব ভবনেই থাকছে।
এর মধ্যে রয়েছে রূপালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক ও বিডিবিএল। সাম্প্রতিক সময়ে রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পরিধি বড় হলেও এসব প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন ভাড়াবাড়ি ও তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ এলাকাতে প্রধান কার্যালয় রয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানের ভাড়া বাবদও প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ চলে যায়। নিরাপত্তাহীনতার প্রশ্নও আছে। অথচ এসব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান একটি ভবনে আনার মতো সম্পদ রয়েছে। এসব চিন্তা মাথায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় ১০ ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এক ভবনে আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
জানা যায়, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২০১৮ সালের ৯ জুলাইয়ের এক বৈঠকের আলোকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রটি জানায়, প্রধানমন্ত্রী নিদের্শিত প্রকল্প হওয়ার কারণে অর্থমন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে এ বিষয়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এগোচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব এ ভবন নির্মাণ সম্পন্ন করে এসব প্রতিষ্ঠানকে এক ভবনে আনা হবে।
সূত্রটি জানায়, দৈনিক বাংলা কমপ্লেক্স ভবনের স্থলে তিনতলা বেইজমেন্টের ওপর ৩০তলা ভবনের পরিকল্পনাও করা হয়েছিল। কিন্তু কেপিআইভুক্ত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এসএসএফ ছাড়পত্র না দেওয়ায় ভবনটি ৩০তলার পরিবর্তে কমিয়ে ২৫তলা স্থির করা হয়। এ ভবনে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভবনের ফ্লোরও বরাদ্দ করা হয়েছিল।
ভবনের ফ্লোরের মূল্য সরবরাহের ক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকের মতো যেসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সামর্থ্য আছে সেসব প্রতিষ্ঠান নিজেদের তহবিল থেকে অর্থ সরবরাহ করবে। যেসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব অর্থ নেই তারা সরকারের কাছ থেকে টাকা চাইবে।
তবে এ ভবন ৩০তলার পরিবর্তে ২৫ তলা অনুমোদন হওয়ায় সোনালী, বাংলাদেশ মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, আইসিবি পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক ও কর্মসংস্থান ব্যাংকের অংশ থেকে ৫ ফ্লোরের বরাদ্দ কমিয়ে আনা হয়।
সূত্র মতে, অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের ৩১ মার্চের বৈঠকের পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের বিষয়টি উঠে আসে। এ ব্যাপারে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি স্থান পায়। বৈঠকে ভবনের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় উঠে আসে। এ জন্য গণপূর্ত অধিদফতরকে নকশা ও প্লাম্বিং ড্রয়িং, ইলেকট্রিক্যাল ড্রয়িং দ্রুততম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে বলা হয়।