“এই সময়ে আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সবার মতো আমারও আগ্রহের জায়াগায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবেগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করি।”
চিত্রনায়ক ফেরদৌস ভারতের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়াকে ভুল মনে করছেন। আর নিজের এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়েছেন তিনি।
ভিসা বাতিল ও ভারত সরকারের কাছ থেকে দেশছাড়ার নির্দেশ পেয়ে ১৬ এপ্রিল রাতেই ঢাকা ফিরেছেন ফেরদৌস। দেশে এসেই তিনি গণমাধ্যমের কাছ থেকে নিজেকে লুকিয়ে রাখেন।
পরবর্তী সময়ে বিশেষ ব্যবস্থায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, অভিনয়শিল্প আমার একমাত্র নেশা ও পেশা। অভিনয়শিল্পের মাধ্যমে বাংলা ভাষাভাষী সবার মধ্যে মেলবন্ধন তৈরিতে সর্বদা কাজ করার চেষ্টা করেছি। আমার ভাবতে ভালো লাগে আমি দুই বাংলায় সমানভাবে জনপ্রিয়। দুই বঙ্গের মানুষের সংস্কৃতি ও জীবনাচারে অনেক সাদৃশ্য রয়েছে।
কিন্তু আপনি শুটিং করতে গিয়ে কেন একটি দলের হয়ে ভারতীয় জাতীয় নির্বাচনে প্রচারণা করতে গেলেন? এমন প্রশ্নের জবাবে ফেরদৌস বলেন, ভারতে জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশের এই নির্বাচন পূর্বের মতো সারা বিশ্বে সাড়া ফেলেছে। এই সময়ে আমি ভারতে অবস্থান করছিলাম। সবার মতো আমারও আগ্রহের জায়াগায় ছিল এই নির্বাচন। ফলে ভাবাবেগে তাড়িত হয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি নির্বাচনী প্রচারণায় আমি আমার সহকর্মীদের সঙ্গে অংশগ্রহণ করি।
তিনি বলেন, এটা পূর্বপরিকল্পনার কোনো অংশ ছিল না। শুধুমাত্র আবেগের বশবর্তী হয়ে আমি অংশগ্রহণ করেছি। কারো প্রতি বিশেষ আনুগত্য প্রদর্শন বা কোনো বিশেষ দলের প্রচারণার লক্ষ্যে নয়, আবার কারো প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করাও আমার উদ্দেশ্য নয়। ভারতের সব রাজনৈতিক দল এবং নেতার প্রতি আমার সম্মান রয়েছে। আমি ভারতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
“আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সবাই আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।”
চিত্রনায়ক ফেরদৌস বলেন, আমি স্বাধীন বাংলাদেশের একজন নাগরিক। একটি স্বাধীন দেশের নাগরিক হিসেবে অন্য একটি দেশের নির্বাচনী প্রচারণায় অংশগ্রহণ কোনোভাবেই উচিত নয়। আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আশা করি, সংশ্লিষ্ট সবাই আমার অনিচ্ছাকৃত ভুলকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
নিজের ভুলের জন্য ক্ষমা চাইলেও জামায়াত সংশ্লিষ্টতা নিয়ে বিজেপি যে অভিযোগ করছে সেটা একেবারেই সত্য নয় বলে জানিয়েছেন এ অভিনেতা। তবে কালো তালিকাভুক্তির বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, ভারতের লোকসভা নির্বাচনে আইনবহির্ভূতভাবে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীর সমর্থনে প্রচারণায় অংশ নেয়ার কারণে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র নায়ক ফেরদৌসকে দেশটি কালো তালিকাভুক্ত করেছে বলে খবর প্রকাশ করেছে কলকাতার গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।
ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি আজ বুধবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বাংলাদেশি অভিনেতা ফেরদৌস আহমেদকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফরেনার্স ডিভিশন।
গত ১৬ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের উত্তর দিনাজপুরের পুলিশ সুপারের মাধ্যমে তাকে ‘লিভ ইন্ডিয়া মেসেজ’ দেওয়া হয়। ‘বিজনেস ভিসা’ নিয়ে এ দেশে এসে রাজনৈতিক দলের প্রচারে যোগ দেয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে ভারতীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র।
ফেরদৌসকে এ জন্য দেশটিতে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করা হয়েছে। নির্দেশ পাওয়ার পর এ দিনই সন্ধ্যায় বিমানে তিনি দেশে ফিরে এসেছেন।