রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে সারা দেশে খোলাবাজারে ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি শুরু করছে।
গত বছর ৫টি পণ্য একসঙ্গে বিক্রি শুরু করলেও এবার অনেকটা অগোছালো অবস্থার মধ্যে মাত্র ৩টি পণ্য নিয়ে বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করছে বলে জানা গেছে।
প্রথম অবস্থায় তেল, চিনি ও মসুর ডাল নিয়ে বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করল প্রতিষ্ঠানটি। এ পণ্যগুলো টিসিবির ট্রাক ও নিজস্ব বিক্রয়কেন্দ্র থেকে কেনা যাবে।
এ বছর পণ্য তিনটির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে গত বছরের চেয়ে কমিয়ে। প্রতি কেজি চিনি ৪৭ টাকা, মসুর ডাল ৪৪ টাকা এবং সয়াবিন তেল ৮৫ টাকায় বিক্রি করা হবে। গত বছর রমজানের আগে চিনি ও মসুর ডাল ৫৫ টাকা এবং ৮৫ টাকায় তেল বিক্রি করা হয়েছে।
টিসিবির মুখপাত্র হুমায়ুন কবির বলেন, মঙ্গলবার থেকে চিনি, তেল ও ডাল বিক্রি শুরু হচ্ছে। রোজার পাঁচ দিন আগে ছোলা এবং দুই দিন আগে থেকে খেজুর বিক্রি করা হবে।
তবে মুখপাত্র আরো বলেন, ছুটির দিন হওয়ার কারণে একজন ক্রেতা কোন পণ্য কতটুকু কিনতে পারবে তা জানাতে পারেনি।
গত বছর একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ চার কেজি করে চিনি ও ডাল, পাঁচ লিটার সয়াবিন, পাঁচ কেজি ছোলা এবং এক কেজি খেজুর কিনতে পেরেছে। গত বছর ৭০ টাকা দরে ছোলা এবং ১২০ টাকা দরে খেজুর বিক্রি করার কারণে বেশ সমালোচনাও শুনতে হয়েছে সংস্থাটিকে। কারণ বাজারেই ওই সময় ছোলা ছিল ৭০-৭৫ টাকা।
প্রতিবছরের মতো পবিত্র রমজান উপলক্ষে সারা দেশে আগামীকাল থেকে টিসিবির পণ্য বিক্রি শুরু হচ্ছে। চলবে রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত। ট্রাকে করে ১৮৭টি স্পটের মধ্যে রজধানীতে ৩৫টি স্পটে, চট্টগ্রামে ১০টি, প্রতিটি বিভাগে পাঁচটি করে, প্রতিটি জেলায় একটি করে স্পটে পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে।
এর বাইরে ডিলাররা বিভিন্ন দোকানেও পণ্য বিক্রি করবে। বর্তমানে টিসিবির মোট ডিলার রয়েছে দুই হাজার ৮২৭ জন।
জানা গেছে, কাল থেকে বিক্রি শুরু হলেও আগেভাগে ডিলারদের কোনো কিছু জানানো হয়নি। গতকাল পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেদিন সরকারি ছুটি থাকায় ডিলারদের পক্ষ থেকে টাকা জমা দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে তারা টাকা জমা দিতে পারেনি।
দিনে দিনে টাকা জমা দিয়ে পণ্য তুলে তা বিক্রির জন্য নেওয়া কষ্টকর। যে কারণে আগামীকাল নির্ধারিত স্পটে পণ্য বিক্রি করা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এদিকে কয়েক বছর ধরে টিসিবি টেন্ডার দিয়ে খেজুর কিনতে পারে না। নির্ধারিত পণ্যের অর্ডার দিয়ে তা না নেওয়া এবং পেমেন্ট নিয়ে কিছু ঝামেলার বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে ব্যবসায়ীদের। স্থানীয় বাজার থেকে কিনে সেটা বিক্রি করতে হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে, এখনো ছোলা টিসিবির গোডাউনে ডেলিভারি হয়নি বলেই পণ্যটির বিক্রি পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। যদিও পণ্যটি আগেভাগেই প্রতিবছর বিক্রি করে আসছিল টিসিবি।
রাজধানীতে টিসিবির পণ্য বিক্রয়ের নির্ধারিত স্থান
সচিবালয় গেট, জাতীয় প্রেস ক্লাব, কাপ্তান বাজার, ভিক্টোরিয়া পার্ক, সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, নিউ মার্কেট-নিলক্ষেত মোড়, শ্যামলী-কল্যাণপুর, জিগাতলা মোড়, ফার্মগেট খামারবাড়ি, কলমিতলা বাজার, কচুক্ষেত রজনীগন্ধা সুপারমার্কেট, আগারগাঁও তালতলা এবং নির্বাচন কমিশন অফিস, উত্তরায় রাজলক্ষ্মী কমপ্লেক্স, মিরপুর-১ বাজার রোড, শান্তিনগর বাজার, মালিবাগ বাজার, বাসাবো বাজার, বনশ্রীতে আইডিয়াল স্কুল, বাংলাদেশ ব্যাংক চত্বর, মহাখালী কিচেন মার্কেট, শেওড়াপাড়া বাজার, দৈনিক বাংলা মোড়, শাহজাহানপুর বাজার, ফকিরাপুল বাজার এবং আইডিয়াল জোন, মতিঝিল বলাকা চত্বর, খিলগাঁও তালতলা বাজার, রামপুরা বাজার, মিরপুর দশ নম্বর চত্বর, উত্তরায় আশকোনা হজ ক্যাম্প, মোহাম্মদপুর টাউন হল কিচেন মার্কেট, দিলকুশা ও মাদারটেক নন্দিপাড়া কৃষি ব্যাংক।