ওয়াগনের ৩ বগি লাইনচ্যুত, এক লাখ লিটার ফার্নেস অয়েল খালে

ডেস্ক রিপোর্ট

লাইনচ্যুত ওয়াগন
লাইনচ্যুত ওয়াগন। ছবি: সংগৃহিত

হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ফার্নেস অয়েলবাহী ওয়াগন লাইনচ্যুত হয়েছে। এ ঘটনায় বিদ্যুৎকেন্দ্রর জন্য আনা সাতটি ওয়াগনের মধ্যে তিনটি ওয়াগন কালভার্ট ভেঙে মরা ছড়ায় (খাল) পড়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এর ফলে প্রায় এক লাখ ৫ হাজার লিটার ফার্নেস ওয়েল ছড়াসহ আশেপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ছে।

এ ফার্নেস ওয়েল বিভিন্ন ছড়া হয়ে হালদা নদীতে পড়ার আশংকা করা হচ্ছে। তবে হালদাতে এ তেল যাতে না যেতে পারে সেজন্য সাময়িক বাঁধ দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। 

আজ সোমবার দুপুরে হাটহাজারী পাওয়ার পিকিং প্লান্টের ৩০০ গজ উত্তরে আবুল কালামের মাদ্রাসার সামনে মরা ছড়ার একটি কালভার্টের উপরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা দুর্ঘটনাস্থল পরির্দশন করেছি। ছড়ায় ছড়িয়ে পড়া ফার্নেস অয়েল যাতে হালদায় না যেতে পারে সেজন্য নদীতে সাময়িক কয়েকটি বাঁধ দেওয়া হয়েছে।

হাটহাজারী ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের ম্যানেজার শফি উদ্দিন আহমেদ বলেন, ফার্নেস অয়েলের দূষণ ঠেকানোর জন্য আমরা স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে কাজ করছি। 

পার্শ্ববর্তী ছড়ায় ছড়িয়ে পড়া ফার্নেস অয়েল। ছবি: সংগৃহিত

এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা নদী গবেষক ড. মঞ্জুরুল কিবরীয়া বলেন, ঘটনাস্থল থেকে প্রায় এক কিলোমিটার পর্যন্ত এ তেলগুলো ছড়িয়েছে। প্রশাসন বাঁধ দেওয়ায় আপাতত দূষণ নিয়ন্ত্রণে। বাঁধ থেকে আরো প্রায় তিন কিলোমিটার পর হালদা। যদি কোনো কারণে তেল নদীতে গিয়ে পড়ে তাহলে মাছ ও জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি হবে।

সাতটি বগিতে করে চট্টগ্রামের হাটহাজারী রেলস্টেশন হয়ে ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রে যাচ্ছিল সাতটি ওয়াগনবাহী রেলটি। পথে একটি ছড়ার উপরে তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

প্রতিটি বগিতে প্রায় ৩৫ হাজার লিটার ফার্নেস অয়েল থাকে। এ প্রসঙ্গে ওয়াগনবাহী রেলের লোকো মাস্টার কাজী নাসির উদ্দিন বলেন, হাটাহাজারী বিদ্যুৎকেন্দ্রে ফার্নেস অয়েল নিয়ে যাওয়ার সময় মরা ছড়ার উপর যে কালভার্ট রয়েছে তারা পাঠাতন ও স্লিপার হঠাৎ করে ভেঙে পড়লে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওয়াগনটি উদ্ধারের জন্য কাজ করছেন রেলের কর্মকর্তারা।

২০১৫ সালেও হালদা নদীতে ছড়িয়েছিল ফার্নেস অয়েল

এর আগে ২০১৫ সালের জুনে চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে সেতু ভেঙে খালে পড়া ট্রেনের বগি থেকে নির্গত ফার্নেস অয়েল দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান কার্প জাতীয় মাছের প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে ছড়িয়েছিল।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে