জিপগুলি ছুটবে কি না সন্দেহ আছে যথেষ্ট। তবে অন্য অনেকের পথ আটকে দিতে পারে সেগুলি। পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ও চার প্রদেশের ভোটে নির্দলীয় ও ধর্মভিত্তিক দলের প্রার্থীর সংখ্যা এ বার সবচেয়ে বেশি। পার্লামেন্টের ভোটে ১৬০ জন নির্দলীয় প্রার্থীরই প্রতীক জিপগাড়ি। কার্যত আলাদা একটা রাজনৈতিক দল। এই জিপগুলিই ভাবনায় রাখছে পিএমএল(এন), পিটিআই এবং পিপিপি— বড় তিন দলকে। এই নির্দলরাই তাদের জেতার পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়াবে না তো! ২৫ জুলাইয়ের ভোটে ধর্মীয় মৌলবাদী ও জঙ্গি নেতাদের দলগুলির ৪৬০ জন প্রার্থীও বড় দলের অনেক প্রার্থীর পাশা উল্টে দিতে পারে।
এটা ঘটনা, জন্মসূত্রে ইসলামি রাষ্ট্র পাকিস্তানে ৯৭ শতাংশ ভোটার মুসলিম হলেও ধর্মীয় দলগুলি কোনও দিনই খুব একটা জনসমর্থন পায়নি ভোটে। পাকিস্তান ভাগের আগে ১৯৭০-এ জামাত-ই-ইসলামি পশ্চিম পাকিস্তানে জ়ুলফিকার আলি ভুট্টোর পিপিপি ও পূর্ব পাকিস্তানে মুজিবর রহমানের আওয়ামি লিগের বিরুদ্ধে প্রচুর প্রার্থী দিয়েছিল। ২০০২ সালে মুত্তাহিদা মজলিস-এ-আমল গোটা দেশে প্রচুর প্রার্থী দেয়। তেমন কিছু করতে পারেনি।
কিন্তু এ বারের পরিস্থিতি আলাদা। এ বারে জঙ্গি-সংযোগ রয়েছে এমন ও ধর্মভিত্তিক দলগুলির প্রার্থীর সংখ্যা সর্বোচ্চ। ময়দানে রয়েছে হাফিজ় সইদের জঙ্গি সংগঠন জামাত উদ-দাওয়ার রাজনৈতিক শাখা আল্লা-হো আকবরও। এই ধর্মীয় দলগুলির দাবি, খাইবার পাখতুনখোয়ায় এ বার তারা সরকার গড়বে। শক্তি অনেকটাই বাড়াবে সিন্ধ ও পাঞ্জাব প্রদেশে। ঐতিহাসিক ভাবেই কাশ্মীর প্রশ্নে পাক সেনার মতো এই দলগুলির মনোভাব ভারত-বিরোধী। যে কারণে প্রতিবেশী দেশে ২৫ জুলাইয়ের ভোটের দিকে সতর্ক নজর রাখছে ভারতও।
পাক পার্লামেন্ট তথা ‘কৌমি অ্যাসেম্বলি’র ৩৪২টি আসনের মধ্যে ৬০টি মহিলাদের ও ১০টি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত।
মাঝপথে অঘটন কিছু না হলে, ৭১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বার গণতান্ত্রিক ভাবে নির্বাচিক কোনও সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে নতুন কোনও নির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় আসবে পাকিস্তানে।