পশ্চিম শেওড়াপাড়ার বাসিন্দা আহমেদ মাহী বুলবুল তার বাড়ির পানি ব্যবহার করতে গিয়ে হঠাৎ ভয় পাচ্ছেন। গত কয়েকদিন থেকে পানিতে বিভিন্ন ধরনের পোকা আসছিল। বৃহস্পতিবার তিনি দেখেন অন্যান্য পোকার সঙ্গে দুটি জোঁকও রয়েছে।
পাঁচ বছর বয়সী একটি ছোট্ট শিশু আছে বুলবুলের। তার স্ত্রী একটি কলেজে শিক্ষকতা করেন। দিনের একটি অংশ শিশুটি বাবার সঙ্গে, কিছুক্ষণ মায়ের সঙ্গে কাটায়। কখনো কখনো সে একাই থাকে। আর এখানেই ভয় বুলবুলের। জোঁক যদি শিশুটাকে কামড়ে দেয়!
ঢাকায় বসবাসকারীদের ওয়াসার পানি নিয়ে অভিযোগের অন্ত নেই। কখনও পানি সরবরাহ স্বাভাবিক না থাকার অভিযোগ। কখনও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও নোংরা বা দুর্গন্ধযুক্ত হওয়ায় তা ব্যবহার করা যায় না।
পশ্চিম শেওড়াপাড়ায় আহমেদ বুলবুলের মতো ধানমন্ডির গ্রিন রোড এলাকাতেও বেশ কয়েকজন গ্রাহক পানিতে জোঁক পাওয়ার অভিযোগ করেছেন সাংবাদিকদের কাছে।
বুলবুলের বাসা পশ্চিম শেওড়াপাড়ার ১১৭/৬ ও ১১৮/৫ নাম্বার প্লটে। ১০তলা বিশিষ্ট প্লটটিতে বেশ কয়েকটি পরিবারের বসবাস। পুরো প্লটের পানির উৎস একই হওয়ায় সবাই একই সমস্যায় ভুগছেন।
- আরও পড়ুন>> আষাঢ়স্য প্রথমও দিবসে…
অতীতে বুলবুলের বাসায় পানিতে বিভিন্ন সময়ে পোকা পাওয়ার পর তারা ওয়াসাকে অভিযোগ করলে ওয়াসার পক্ষ থেকে তাদের বাসার পানির ট্যাংক বা হাউজ পরিস্কার না বলে উল্টো অভিযোগ করেন।
পেশায় দাঁতের চিকিৎসক বুলবুল বলেন, ‘অতীতে পানিতে পোকা পাওয়ার অভিযোগ করে কোনো লাভ হয়নি। ওয়াসার ভাষ্য, আমাদের পানির ট্যাংক থেকে এমনটি হচ্ছে। কিন্তু আমার কাছে অবাক লাগছে গত চার দিন আমাদের ট্যাংকি পরিস্কার করা হয়েছে। তাহলে এবার এবার এমন হবে কেন?’’
গ্রিন রোড এলাকার বাসিন্দা জাকির হোসেন অভিযোগ করেন, পানির কল খুললে কোঁচো ও বিভিন্ন ধরণের পোকা আসছে। একইসঙ্গে পানিতে দুর্গন্ধ তো আছেই। পানি ব্যবহার করাই যাচ্ছে না।
গ্রিন রোড এলাকার ২০০ নাম্বার গলির তাকওয়া মসজিদের খাদেম বলেন, ‘রোজার আগে থেকেই মসজিদের পানি ব্যবহার করা যাচ্ছিল না গন্ধের জন্য। এ নিয়ে মসজিদ কমিটি ওয়াসাকে অভিযোগ করেছে, কিন্তু তারা এখন পর্যন্ত ব্যবস্থা নেয়নি। ঈদের পর থেকে দেখছি, পানিতে ছোট ছোট কোঁচো বের হচ্ছে। গত রাতে এশার নামাজের আগে মুসল্লিরা অনেকেই অভিযোগ করেছে, পানির সঙ্গে জোঁক দেখা গেছে।’
এই মসজিদের পঞ্চম তলায় একটি আবাসিক মেস রয়েছে। সেখানে থাকেন, এমন কয়েকজন জানান, তারা বাহির থেকে কিনে পানি খাচ্ছেন। গত কয়েকদিনের পোকা পাবার ঘটনায় তারা ঠিকমত গোসল ও অন্যান্য কাজে ঠিকমতো পানি ব্যবহার করতে পারছে না।
এ বিষয়ে ওয়াসার পরিচালক প্রকৌশলী শহিদুল ইসলা বলেন, ‘এইরকম ঘটনা ঘটে থাকে। এটা আমরা স্বীকার করছি। সাধারণত এ ধরণের ঘটনা ঘটে পাইপ ছিদ্র হয়ে গেলে। যার কারণে বিভিন্ন ধরনের পোকা প্রবেশ করে। যেহেতু আমরা বিষয়টি জেনেছি, ঠিকানা অনুযায়ী এই সমস্যা দ্রুত সমাধান করব।’
আমাদের বাসায় ও এই পোকা পানি আসছে ।কি করবো বুঝতে পারছি না। বাচ্চারা কিছু দিন পর পর অসুস্থ হয়ে পরছে ।