নিম্নমানের প্রমাণ পাওয়ায় বাজার থেকে তুলে নিতে নির্দেশ পেলেও স্কয়ার এবং প্রাণের মতো বড় কোম্পানি বিএসটিআই এর কথা শোনেনি। ৭২ ঘণ্টার সময় সীমা পেরিয়ে গেলেও এখনো স্কয়ারের রাঁধুনি ব্রান্ডের ধনিয়া ও জিরার গুঁড়া এবং প্রাণের প্রিমিয়াম ব্রান্ডের ঘি এখনো বাজারে রয়ে গেছে।
বাজার থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা করে গত মঙ্গলবার বিএসটিআই জানায়, ২২টি পণ্য মানুষের খাবারের জন্য উপযুক্ত নয়। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এসব পণ্য তুলে নিতে সময় বেঁধে দেয়।
এসব পণ্য হচ্ছে প্রাণ ডেইরির প্রাণ প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের ঘি, স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজের রাঁধুনী ব্র্যান্ডের ধনিয়া গুঁড়া ও জিয়ার গুঁড়া, হাসেম ফুডসের কুলসন ব্র্যান্ডের লাচ্ছা সেমাই, চট্টগ্রামের কনফিডেন্স সল্টের কনফিডেন্স ব্র্যান্ডের এবং এ সল্টের মুসকান ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ।
বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো জাতীয় পর্যায়ের নয়। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামের যমুনা কেমিক্যাল ওয়ার্কসের এ-সেভেন ব্র্যান্ডের ঘি, চট্টগ্রামের কুইন কাউ ফুড প্রোডাক্টসের গ্রিন মাউন্টেন ব্র্যান্ডের বাটার অয়েল, ঝালকাঠির জে কে ফুড প্রোডাক্টের মদিনা ব্র্যান্ডের লাচ্ছা সেমাই, চাঁদপুরের বিসমিল্লাহ সল্ট ফ্যাক্টরির উট ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ এবং চাঁদপুরের জনতা সল্ট মিলসের নজরুল ব্র্যান্ডের আয়োডিনযুক্ত লবণ।
- আরও পড়ুন>> পথ হারায়া কোন বনে যাই
এসব পণ্য বাজার থেকে তুলে না নিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে-বিএসটিআই পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে এই বিষয়টি জানিয়েছে। তাদের বেঁধে দেওয়া ৭২ ঘণ্টা সময় শেষ হয়েছে শুক্রবার। কিন্তু গতকাল শনিবারও রাজধানীতে বিভিন্ন এলাকার দোকানে বড় কোম্পানির পণ্যগুলো দেখা যায়।
বিক্রেতারা জানান, কোনো প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে বাজার থেকে এসকল পণ্য তুলে নেয়া হয়নি। আর এগুলো যে তুলে নিতে বলা হয়েছে, তাও জানেন না ব্যবসায়ীরা।
পাইকারি ব্যবসায়ী হোসেন বলেন, ‘আমরা তো জানি না কী কী নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আমরা তো আগের ৫২ টা বাদে সবই বিক্রি করি। কোম্পানিও তো কিছু বলল না।’
নতুন করে ২২টি পণ্য বাজার থেকে তুলে নেয়ার নির্দেশনা জানেন না একই বাজারের খুচরা ব্যবসায়ী আল আমিনও। বলেন, ‘নিষিদ্ধ করা হইল ৫২ টা। আপনি কন ২২ টা। কাহিনি কী?’
দেশের বেশ কিছু সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ দেখানো হলে এই বিক্রেতা বলেন, ‘আমাদের দোকান ঈদের ছুটিতে বন্ধ ছিল। আমরা জানতাম না। আর কোম্পানির লোকজনও কিছু বলে নাই।’
মিরপুর এলাকার মুদি ব্যবসায়ী আহসান বলেন, ‘নিষিদ্ধ করা হইলে কোম্পানি আমাদের বলে না কেন? ম্যাজিস্ট্রেট আসলে তো আমাদের জরিমানা করে। আমরা তো কিছুই জানি না।’
এবিষয়ে বিএসটিআই এর সহকারী পরিচালক রিয়াজুল হক বলেন, ‘২২টি নিষিদ্ধ পণ্য বাজারে আছে কি না সেটি দেখতে আমরা অভিযান পরিচালনা করছি। শনিবার আমাদের দুটি দল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে অভিযান চালিয়েছে। এসময় নিষিদ্ধ পণ্যগুলো পাওয়া যাওয়ায় আমরা ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেছি।’
তিনি জানান, নিষিদ্ধ ২২টি পণ্য বাজার থেকে তুলে নিতে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি, খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদেরও এসব পণ্য বিক্রি বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ ছাড়া নিষিদ্ধ এসব পণ্য বাজার থেকে সরিয়ে নিতে বিএসটিআই এর পক্ষ থেকে দেশব্যাপী অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির এই সহকারী পরিচালক।