হাইকোর্টে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান

আইন ও বিচার ডেস্ক

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক
নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। ফাইল ছবি

আদালতের নির্দেশানুযায়ী হাইকোর্টে হাজির হয়েছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক। আজ রোববার সকাল ১০টার দিকে তিনি আদালতে উপস্থিত হন।

এদিন বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে বিএসটিআইয়ের পরীক্ষায় মানহীন ৫২টি পণ্য বাজার থেকে তুলে নিতে ও জব্দে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশনা প্রতিপালন না করা বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে মানহীন ৫২টি খাদ্যপণ্য দ্রুত বাজার থেকে সরাতে ও জব্দে হাইকোর্টের দেয়া নির্দেশ বাস্তবায়নে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম ‘আইওয়াশ’ (লোক দেখানো) বলে অভিহিত করেন হাইকোর্ট।

নির্দেশনা প্রতিপালন না করায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের প্রতি আদালত অবমাননার রুল দিয়ে এ বিষয়ে নিজের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে ১৬ জুন তাকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে গত ২৩ মে হাইকোর্ট আদেশ দেন।

এর আগে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ১২ মে হাইকোর্ট এক আদেশে রুল দিয়ে মানহীন পণ্য অবিলম্বে সরাতে ও জব্দে ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দিয়েছিলেন।

সেই সঙ্গে নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানিয়ে ওই দুই কর্তাব্যক্তিকে আদালতে প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়। ২৩ মে অগ্রগতিবিষয়ক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য ছিল।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিএসটিআই ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে, যার মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়।

এতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ৫২টি নিম্নমানের পণ্য রয়েছে। গত ২ মে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিএসটিআই।

৫২টি পণ্য হলো- ১. সিটি অয়েলের সরিষার তেল (তীর), ২. গ্রিন ব্লিচিংয়ের সরিষার তেল (জিনি), ৩. শমনমের সরিষার তেল (পুষ্টি), ৪. বাংলাদেশ এডিবল অয়েলের সরিষার তেল (রূপচাঁদা), ৫. কাশেম ফুডের চিপস (সান), ৬. আররা ফুডের ড্রিংকিং ওয়াটার (আরা), ৭. আল সাফির ড্রিংকিং ওয়াটার (আল সাফি), ৮. মিজানের ড্রিংকিং ওয়াটার, ৯. মর্ন ডিউয়ের ড্রিংকিং ওয়াটার, ১০. ডানকানের ন্যাচারাল মিনারেল ওয়াটার,

১১. আরার ডিউ ড্রিংকিং ওয়াটার, ১২. দীঘির ড্রিংকিং ওয়াটার, ১৩. প্রাণের লাচ্ছা সেমাই, ১৪. ডুডলি নুডুলস, ১৫. শান্ত ফুডের সফট ড্রিংক পাউডার (টেস্টি, তানি, তাসকিয়া), ১৬. জাহাঙ্গীর ফুড সফট ড্রিংক পাউডার, ১৭. ড্যানিশের হলুদের গুঁড়া, ১৮. প্রাণ এগ্রো লিমিটেডের হলুদের গুঁড়া (প্রাণ), ১৯. তানভীর ফুড লিমিটেডের হলুদের গুঁড়া ফ্রেশ, ২০.

এসিআইয়ের ধনিয়ার গুঁড়া, ২১. কারি পাউডার (প্রাণ), ২২. কারি পাউডার ড্যানিস, ২৩. বনলতার ঘি, পিওর হাটহাজারী মরিচ গুঁড়া, ২৪. মিষ্টিমেলার লাচ্ছা সেমাই, ২৫. মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, ২৬. মিঠাইয়ের লাচ্ছা সেমাই, ২৭. ওয়েল ফুডের লাচ্ছা সেমাই, ২৮. এসিআইয়ের আয়োডিনযুক্ত লবণ, ২৯. কিংয়ের ময়দা, ৩০. রূপসার দই,

৩১. মক্কার চানাচুর, ৩২. মেহেদীর বিস্কুট, ৩৩.বাঘাবাড়ীর স্পেশাল ঘি, ৩৪. নিশিতা ফুডসের সুজি, ৩৫. মধুবনের লাচ্ছা সেমাই, ৩৬. মঞ্জিলের হলুদ গুঁড়া, ৩৭. মধুমতির আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৩৮. সান ফুডের হলুদ গুঁড়া, ৩৯. গ্রিন লেনের মধু, ৪০. কিরণের লাচ্ছা সেমাই,

৪১. ডলফিনের মরিচের গুঁড়া, ৪২. ডলফিনের হলুদের গুঁড়া, ৪৩. সূর্যের মরিচের গুঁড়া, ৪৪. জেদ্দার লাচ্ছা সেমাই, ৪৫. অমৃতের লাচ্ছা সেমাই, ৪৭. দাদা সুপারের আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৪৮. তিন তীরের আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৪৯. মদিনা স্টারশিপ আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৫০. তাজ আয়োডিনযুক্ত লবণ, ৫১. নুরের আয়োডিনযুক্ত লবণ ও ৫২. মোল্লা সল্ট।

এর পর ৯ মে ৫২টি পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার বা জব্দ চেয়ে কনসাস কনজ্যুমার সোসাইটির (সিসিএস) পক্ষে সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক রিট করেন।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে