ভারতকে হারানোর সামর্থ্য আমাদের আছে : সাকিব

ক্রীড়া ডেস্ক

সাকিব আল হাসান
ফাইল ছবি

সাকিব আল হাসান বলেছেন, ভারতকে হারানোও অসম্ভব নয়। এছাড়া সাকিব যা বললেন, তা থেকে কালকের ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন নিয়ে প্রতিবেদনের শিরোনাম দিয়ে দেওয়া যায়, ‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল।’

বিশ্বকাপে এ মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি রান সাকিবের। এক ম্যাচে সবচেয়ে ভালো বোলিং সাকিবের। যৌথভাবে সবচেয়ে বেশিবার ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন সাকিব। পুরো বিশ্বকাপেই সবচেয়ে সুখী খেলোয়াড়ও তো সাকিবেরই হওয়ার কথা! তো এই যে তিনি সুখের হাওয়ায় ভেসে ভেসে একটার পর একটা সাফল্য তুলে নিচ্ছেন, এর পেছনের রহস্যটা কী?

আঁকাবাঁকা ও চড়াই-উতরাই পথ পেরিয়ে রোজ বোলের সংবাদ সম্মেলনকক্ষে গিয়ে আবারও জানা গেল, সবকিছুর গোড়ায় তার ফিটনেস। আইপিএলে ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়ে ফিটনেসের ওপর জোর দিয়েছিলেন সাকিব। ওজন কমিয়ে ঝরঝরে হয়ে ফিট তো হয়েছেনই, সঙ্গে পেয়েছেন অফুরান আত্মবিশ্বাস। কাল অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আফগানিস্তানকে উড়িয়ে দেওয়ার পর সাকিবের কথা, ‘শারীরিক ফিটনেস আমাকে মানসিকভাবেও শক্ত হতে অনেক সাহায্য করেছে। কঠিন পরিস্থিতি সামলাতে শারীরিক ফিটনেসটা দরকার। আমার মনে হয়, সে জন্যই আমি কঠিন পরিস্থিতিতে ভালো খেলতে পারছি।’

সংবাদ সম্মেলনে একটু আগে এসে যাওয়ায় পেছনে বসে আফগান অধিনায়ক গুলবদিন নাইবের কথাও শুনতে পেয়েছেন সাকিব। ইংরেজি, পশতু—দুই ভাষাতেই গুলবদিন শুধু সাকিবের প্রশংসাই করে গেলেন। শুনে মৃদু হেসেছেন সাকিব।

তবে গুলবদিন টস জিতে বাংলাদেশকে ব্যাটিংয়ে পাঠানোটাকে সঠিক সিদ্ধান্ত দাবি করলেও সাকিব বলেছেন ভিন্ন কথা, ‘আমরা একটু বিস্মিত হয়েছি। কারণ, আগের ম্যাচটাও এই উইকেটে হয়েছে। যারা টসে জিতবে, তারা আগে ব্যাটিং নেবে, এটাই আমাদের ধারণা ছিল।’

বাংলাদেশ ২৬২ রান করলেও রোজ বোলের উইকেটে ২৪০ রানই জেতার মতো স্কোর বলেছেন সাকিব, ‘এটা কিন্তু ৩০০-৩৫০ রান করার উইকেট নয়। আমাদের লক্ষ্য ছিল ৫০ ওভার ব্যাট করে অন্তত ২৪০ রান করা। আমরা তা থেকেও ২০-২২ রান বেশি করেছি।’ বোলিংয়ে বাংলাদেশ দলের মূল পরিকল্পনা ছিল যত বেশি ডট বল দিয়ে আফগানিস্তানকে চাপে ফেলা। গুলবদিনের দল নিতে পারেনি সেই চাপটাই।

সেমিফাইনালে যাওয়ার প্রথম শর্ত এখন ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে পরের দু’টি ম্যাচেই জেতা। সাকিবের কাছে অসম্ভব মনে হচ্ছে না সেটিও, ‘ভারতের বিপক্ষে পরের ম্যাচটা আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। ওরা চ্যাম্পিয়ন হতেই এসেছে। ওদের হারাতে আমাদের অনেক ভালো খেলতে হবে। আমার বিশ্বাস, আমাদের সেই সামর্থ্য আছে।’

কালকের জয়ের পর ৭ পয়েন্ট নিয়ে আবারও পয়েন্ট তালিকার পাঁচে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। এক ম্যাচ কম খেলা ইংল্যান্ড ৮ পয়েন্ট নিয়ে চারে। তবে সাকিবের চোখে ইংল্যান্ডের চেয়ে সেমিফাইনালে যাওয়াটা বাংলাদেশের জন্যই সহজ, ‘ওদের তিন ম্যাচের তিনটিই জিততে হবে। আমাদের জিততে হবে দুই ম্যাচে দু’টি। কাজটা কঠিন, তবে ভালো খেললে অসম্ভব নয়।’

বার্মিংহামে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ ২ জুলাই। তার আগের এই লম্বা বিরতির প্রথম চার দিন ক্রিকেটারদের ছুটি। দলের কেউ কেউ লন্ডন বা ইংল্যান্ডেরই অন্য শহরে ঘুরতে যাবেন। কেউ যাবেন সংক্ষিপ্ত ইউরোপ ভ্রমণে। সাকিবের সপরিবার যাওয়ার কথা প্যারিসে। আইফেল টাওয়ারে উঠেই হয়তো দেখতে চান ওপর থেকে দুনিয়াটা কেমন লাগে। সুখী মানুষ সাকিব যে এখন বিশ্বকাপেও আছেন সবার ওপরে!

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে