নোয়াখালীতে প্রসূতির সিজার করতে গিয়ে পেটের সঙ্গে গর্ভের নবজাতকের মাথাও কেটে ফেলেছেন চিকিৎসক। এতে নবজাতকের সঙ্গে প্রাণ হারিয়েছেন বিবি কুলসুম ওরফে আকলিমা নামের ওই মা।
বুধবার রাতে পৌর সদরের নিউ সেন্ট্রাল হাসপাতালে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আকলিমা সেনবাগ উপজেলার ডুমুরিয়া ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মো. রিপন হোসেনের স্ত্রী।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ হাসপাতালের মালিকসহ দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। ভুল অপারেশনকারী চিকিৎসক মঞ্জুরুল হক পালিয়ে গেছেন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সেনবাগ থানায় হত্যা মামলা হয়েছে।
জানা যায়, কুলসুমের (আকলিমা) প্রসব বেদনা উঠলে বুধবার বিকেলে সেনবাগ পৌরসভার নিউ সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ৮টার দিকে হাসপাতালের মালিক হারুনুর রশিদ ও পরিচ্ছন্নতা কর্মী আমিনুল ইসলামকে নিয়ে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার মঞ্জুরুল হক সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা প্রসব করানোর জন্য প্রসূতিকে অপারেশন থিয়েটারে নেন। সেখানে হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা কর্মী আমিনুল রোগীকে অ্যানেসথেসিয়া দেন।
এরপর ডা. মঞ্জুরুল হক প্রসূতির তলপেট কাটতে গিয়ে গর্ভের শিশুর মাথা কেটে ফেলেন। বিষয়টি তিনি টের পেয়ে বাচ্চা প্রসব না করিয়ে রোগীর তলপেটে ব্যান্ডেজ বেঁধে দিয়ে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তড়িঘড়ি করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। সেখানে নেওয়ার পথে আকলিমা ও তার পেটের সন্তান মারা যায়।
- আরও পড়ুন, ১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনের লিখিত পরীক্ষা শুরু
এ ঘটনায় গৃহবধূ আকলিমার বাবা সিদ্দিকুর রহমান বাদী হয়ে হাসপাতাল মালিক ও অপারেশনকারী চিকিৎসকসহ ৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৪-৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে সেনবাগ থানায় মামলা দায়ের করেন।
সেনবাগ থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, পুলিশ অভিযান চালিয়ে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা হলো- হাসপাতালের মালিক পৌরসভার বাবুপুর গ্রামের ওহিদুর রহমানের ছেলে হারুনুর রশিদ ও পরিচালক উপজেলার কাবিলপুর গ্রামের মাহমুদুল হকের ছেলে আমিরুল ইসলাম।
সিভিল সার্জন ডা. মোমিনুর রহমান বলেন, ঘটনা তদন্তে সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মতিউর রহমানকে আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।