বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিরহরিৎ বনাঞ্চল আমাজনে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে জি-৭ দেশগুলো যে অর্থ সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে তা প্রত্যাখ্যান করা হবে বলে জানিয়েছে ব্রাজিল সরকার।
সোমবার ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ আমাজনের দাবানল নিয়ন্ত্রণে জি-৭ দেশগুলো দুই কোটি ২০ লাখ ডলার দিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
এই অর্থ সহায়তার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের কোনো কারণ দেখাননি ব্রাজিলের কর্মকর্তারা। খবর বিবিসির।
তবে ফ্রান্স তাদের সঙ্গে ‘উপনিবেশ’র মতো আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনারো।
আমাজনের আগুন নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েনি বলে দাবি করেছেন ব্রাজিলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফের্নান্দো আজেভেদো ই সিলভা। আমাজনে আগুন নেভাতে ৪৪ হাজার সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
জি-৭ এর অর্থ সহায়তার প্রস্তাবের বিষয়ে বোলসোনারোর চিফ অব স্টাফ অনিক্স লোরেনজোনি গ্লোবো নিউজ ওয়েবসাইটকে বলেন, ধন্যবাদ, কিন্তু সম্ভবত ওই সম্পদগুলো ইউরোপে বনায়ন করার কাজে লাগালে বেশি প্রাসঙ্গিক হবে।
আমাজনে চলতি বছর রেকর্ড সংখ্যক আগুন লাগার ঘটনার প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাপী উৎকণ্ঠা বেড়েছে।
ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইনপে উপগ্রহ থেকে পাওয়া তথ্যে চলতি বছর ব্রাজিলজুড়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮৫ শতাংশ বেশি অগ্নিকাণ্ডের খবর জানিয়েছে। এ অগ্নিকাণ্ডের বেশিরভাগই সংঘটিত হয়েছে আমাজন অঞ্চলে।
গত জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত আমাজন বনে ৭২ হাজার ৮০০টি আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কতবার আগুন লাগানো হয়েছে তা জানা না গেলেও সমালোচকরা দেশটির প্রেসিডেন্ট জাইর বোলসোনেরো প্রশাসনকে অভিযুক্ত করছেন। তারা বলছেন, বোলসোনেরো প্রশাসনের দায়মুক্তির সংস্কৃতি বন ধ্বংসে ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়ায় আগুন লাগার ঘটনা বেড়েছে।
যদিও আন্তর্জাতিক চাপে বোলসোনেরো ইতোমধ্যে আমাজনের আগুন নেভানোর কাজে সহযোগিতা করতে সেনাবাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি ‘আমাজন সুরক্ষায়’ তিনি সহযোগিতা চান বলেও জানিয়েছেন।
গত সপ্তাহে জি-৭ সম্মেলনে আমাজনের অগ্নিকাণ্ডকে ‘আন্তর্জাতিক সংকট’ বলে উল্লেখ করেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাক্রোঁ।
সে সময় ম্যাক্রোঁর এ মন্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দেখান ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট। ম্যাক্রোঁ ‘রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার জন্য আমাজনের অগ্নিকাণ্ডকে ব্যবহার করছেন বলেও তখন অভিযোগ করেছিলেন বোলসোনেরো।