ইয়াবা ভাগ-বাটোয়ারা করতে গিয়ে ৫ পুলিশ ধরা

মহানগর প্রতিবেদক

ইয়াবা ভাগ-বাটোয়ারায় পুলিশ ধরা
ফাইল ছবি

রাজধানীর গুলশানের গুদারাঘাট চেকপোস্টে মোটরসাইকেল তল্লাশি করে পুলিশ সাড়ে পাঁচশ পিস ইয়াবা পায়। পরে সেই ইয়াবাগুলো বাহিনীটির পাঁচ সদস্য মিলে ভাগ-বাটোয়ারা করার সময় ধরা পড়েন পুলিশেরই হাতে।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে রোববার রাতে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএনের চার সদস্য এবং গুলশান থানার একজন এএসআইকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা পুলিশ সদস্যরা হলেন- গুলশান থানার এএসআই মাসুদ আহমেদ মিয়াজী, এপিবিএনের কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল, নায়েক জাহাঙ্গীর আলম, কনস্টেবল রনি মোল্ল্যা, কনস্টেবল শরিফুল ইসলাম। উত্তরা পূর্ব থানা ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন এপিবিএন পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে।

রোববার রাতেই পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেন আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন-১ এর এসআই আবু জাফর। তিনি গণমাধ্যমকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আবু জাফর বলেন, আমি এই অভিযানে নেতৃত্বে ছিলাম। তাদের গ্রেপ্তারের পর ইয়াবাসহ উত্তরা পূর্ব থানায় পাঠিয়েছি। গ্রেপ্তার পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে থানার তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ডে নিতে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে।

মামলার এজাহারে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে উত্তরার এপিবিএন-১ সদর দপ্তরের ব্যারাক ভবনের চতুর্থ তলার বাথরুমের সামনে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ইয়াবার ভাগ-বাটোয়ারা করছেন। তখনই তাদের বিরুদ্ধে অভিযানের সিদ্ধান্ত নেয় এপিবিএন। ঊর্ধ্বতনদের অনুমতি নিয়ে একটি ফোর্স যায় সেই বাথরুমে। অভিযানের নেতৃত্বে ছিলেন এপিবিএন-১ এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবু জাফর।

অভিযানে বাথরুমের সামনে গিয়ে কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডল, কনস্টেবল রনি মোল্ল্যা ও কনস্টেবল শরিফুল ইসলামকে দেখতে পায় তারা। এরপর তাদের নাম-পরিচয় জিজ্ঞাসা করা হয়। বিস্তারিত পরিচয় নেয়ার পর তল্লাশি চালানো হয় কনস্টেবল প্রশান্ত মণ্ডলকে। তার পরিহিত ফুল প্যান্টের ডান পকেট থেকে ১৫৮ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। অভিযান চালানো হয় মণ্ডলের ব্যারাকের রুমে। সেখানে তার কাপড়ের ট্রাঙ্ক থেকে আরও ৩৯৪ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর শরিফুলের কাছ থেকে ইয়াবা বিক্রির নগদ ১৫ হাজার টাকাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

এবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় শরীফুলকে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পুলিশকে জানান, তিনি রনি মোল্ল্যার কাছ থেকে ১৮ হাজার পাঁচশ টাকায় ১৫০ পিস ইয়াবা কিনেছেন। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় রনিকে।

সর্বশেষ প্রশান্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানান, ১১ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৬টায় গুলশানের গুদারাঘাট চেকপোস্টে একটি মোটরসাইকেল তল্লাশি করে আরোহীর কাছ থেকে ইয়াবাগুলো উদ্ধার করা হয়। তবে মোটরসাইকেল আরোহীর সঙ্গে যোগসাজশ করে তাকে ছেড়ে দিয়ে তার কাছে থাকা ২০০ পিস ইয়াবা গুলশানের এএসআই মাসুদ মিয়াজী তার হেফাজতে রাখেন। বাকি ১৫০ পিস নেন জাহাঙ্গীর আলম।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে