লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি সভাপতি ও জাতীয় মুক্তিমঞ্চের সমন্বয়কারী ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বলেছেন, পাপের ভারে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হবে। অতীতেও অনেকের ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। সুতরাং সময় ক্ষেপণ করে লাভ হবে না। সরকারের পতন অনিবার্য-সময়ের ব্যাপার।
তিনি বলেন, বিবেকের তাড়নায় হয়ত দুর্নীতিবাজরাও সরকারকে সমর্থন দেবে না। অন্যায়কারী এবং জুলুমবাজদের ধ্বংস অনিবার্য। যত দ্রুত সম্ভব সংসদ ভেঙে দিয়ে পদত্যাগ করুন। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনঃনির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।
আজ শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ সব কথা বলেন।
বিবৃতিতে অলি আহমদ বলেন, আমরা এ দেশ স্বাধীন করেছি। সুতরাং একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেকের তাড়নায়, চুপ করে বসে থাকতে পারি না। এ দেশের জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্ব রয়েছে এবং সে দায়িত্ব পালনে আমরা বদ্ধপরিকর।
তিনি বলেন, এখনও পর্যন্ত যারা গ্রেফতার হয়েছে তারা সবাই সরকারি দলের নেতা। সুতরাং অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে পার পাওয়া যাবে না। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন ক্লাবে কেন অভিযান করা হল। উচিত ছিল পরিকল্পিতভাবে সমগ্র দেশে একই দিন এবং একই সময়ে অভিযান পরিচালনা করা। তাহলে রাষ্ট্রদ্রোহীরা গাঢাকা দিতে পারত না। এর অর্থই হল সরকার তাদের নেতাকর্মীদের পালানোর সুযোগ করে দিয়েছে। মালামাল ও টাকা-পয়সা সরানোর জন্য সময় দিয়েছে।
অলি আহমদ বলেন, এখনও পর্যন্ত খালেদ, শামীম, লোকমানদের দোসরেরা/পার্টনারেরা কেন গ্রেফতার হল না। যে সব মন্ত্রী, এমপি এবং নেতাদের নাম খালেদ ও শামীম প্রকাশ করেছে তাদের কেন জেলে নেয়া হচ্ছে না। এ ছাড়াও যে সব এমপি স্বনামে-বেনামে ঠিকাদারী করছে তাদের কেন খুঁজে বের করা হচ্ছে না। এর দায়িত্ব কার।
তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের ব্যবসা করতে দিন। রাজনীতিকে কলুষিত করতে দেয়া যাবে না। দুদকের ভূমিকা আরও স্বচ্ছ হওয়া উচিত ছিল। কীভাবে অনেক মন্ত্রী, এমপি এবং তাদের স্ত্রী রাতারাতি ব্যাংক, বীমা, বিশ্ববিদ্যালয় ও বড় বড় হোটেলের মালিক হল তা খুঁজে বের করা উচিত। আমরা মনে করি, সন্দেহভাজন এ সব মন্ত্রী ও এমপির স্ত্রীদের আয়কর রিটার্নের ফাইলগুলোও পরীক্ষা করা উচিত।
বিবৃতিতে অলি বলেন, অনেক অবৈধ মন্ত্রী বলছেন- জুয়া ও মাদক জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানের সময় থেকে শুরু হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে বিগত ১১ বছর এগুলো বন্ধ করার জন্য আপনারা কী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য অনেকগুলো আইন বাতিল করা হয়েছে । নতুন নতুন আইন পাস করা হয়েছে। অথচ জুয়া ও মাদক বন্ধ করার জন্য কোনো আইন পাস করা হয়নি। শুধু অন্যকে দোষারোপ করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে চায়।
তিনি আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত সাগর-রুনির খুনিরাও ধরা পরেনি। ব্যাংকের টাকা লুণ্ঠনকারীদের ধরা হচ্ছে না বরং তাদের বর্ধিত সুবিধা প্রদান করা হচ্ছে। শেয়ার মার্কেট কেলেংকারির সঙ্গে জড়িতদের কোনো শাস্তি হয়নি। হলমার্ক, যুবক, ডেসটিনির সঙ্গে জড়িত অনেক দুর্নীতিবাজরা পার পেয়ে যাচ্ছে। হয়ত সেই দিন আর বেশি দূরে নয়। জনগণ অন্যায়কারী ও জুলুমবাজদের বিচার করবে। বেকার যুবকরাও বসে থাকবে না। একদিন না একদিন মানুষ ঘর থেকে বের হয়ে আসবেই।