এই প্রথমবারের মতো ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাংলাদেশ তাদের তরল প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করবে বলে দুই দেশের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের তৃতীয় দিনে গতকাল শনিবার এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
তবে যে ইস্যুগুলোতে বাংলাদেশে অনেকেরই নজর ছিল- যেমন তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগি কিংবা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের প্রশ্নে ভারতের অধিকতর সমর্থন আদায়, সেগুলোতে বিশেষ অগ্রগতির লক্ষণ চোখে পড়েনি।
জানা গেছে, গতকাল শনিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও প্রধানমন্ত্রী হাসিনার মধ্যকার অনুষ্ঠিত বৈঠকে এসব ইস্যুতে কোনও নাটকীয় মোড় আসেনি।
বরং বাংলাদেশ ভারতে তাদের প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করতে সম্মত হয়েছে। এ সময় এলপিজি রপ্তানি জন্য একটি প্রকল্পেরও উদ্বোধন করেন দুই প্রধানমন্ত্রী।
এই প্রকল্পে বাংলাদেশ থেকে বুলেট ট্রাকে করে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস ত্রিপুরার বিশালগড় বটলিং প্ল্যান্টে নিয়ে আসা হবে। তারপর তা উত্তর-পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হবে। এতে এলপিজি সিলিন্ডার অনেক কম পরিবহন-খরচে এবং কম সময়ে ওইসব দুর্গম এলাকায় পৌঁছে যাবে।
- আরও পড়ুন >> অবশেষে যুবলীগ নেতা সম্রাট গ্রেফতার
এই পদক্ষেপ দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতেও সাহায্য করবে বলেও খবরে বলা হচ্ছে। এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও মোদির সঙ্গে বৈঠককালে এই বিষয়টিতেই জোর দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
এদিন তিস্তা নদীর পানি বন্টনের মতো স্পর্শকাতর ইস্যুতেও বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা হলো ত্রিপুরার সাব্রুম শহরের পানীয় জল জোগাতে ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক জল সরবরাহ করবে বাংলাদেশ।
বৈঠক চলাকালে ফেনীসহ সাতটি অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগির জন্য একটি কাঠামো প্রস্তুত করতেও যৌথ নদী কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। যদিও এই সাতটির মধ্যে তিস্তা নেই। তবে দুই দেশের কর্মকর্তারা বলছেন, এই কাঠামোই আগামী দিনে সম্ভাব্য তিস্তা চুক্তির ভিত গড়ে দিতে পারে।
বৈঠক শেষে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, “শেখ হাসিনার সঙ্গে আজকের এই এলপিজি-আমদানিসহ এই নিয়ে গত এক বছরে আমি অন্তত ডজনখানেক প্রকল্পের উদ্বোধন করলাম।”
তিনি আরো বলেন, “যার সবগুলোরই লক্ষ্য এক – আমাদের নাগরিকদের জীবনের মানে উন্নতি ঘটানো। আর এটাই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের মূলমন্ত্র।”
সূত্র : বিবিসি বাংলা