ক্লাব ব্যবসার আড়ালে জুয়া ও অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনার মাধ্যমে প্রচুর অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছে এমন অন্তত ২০ জনের নামের তালিকা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে এসেছে। ইতোমধ্যে এদের সম্পদের অনুসন্ধানও শুরু করেছে সরকারি এই সংস্থাটি।
আজ সোমবার রাজধানীর সেগুন বাচিগায় দুদক প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি করে অবৈধ সম্পদ অর্জন করে কেউ পার পাবে না। শিগগিরই আইনের আওতায় তাদের আনা হবে।’ তবে যে ২০ জনের তালিকা এসেছে তাদের নাম প্রকাশ করেননি দুদক চেয়ারম্যান।
যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চেৌধুরীর অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ প্রসঙ্গে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, কেউ আইনের উর্দ্ধে নয়। সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে।
প্রসঙ্গত, যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাদের নিয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হসিনার ক্ষোভ প্রকাশের চার দিনের মাথায় গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র্যাব।
ওই দিনই গুলশানের বাসা থেকে যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, অস্ত্র আইন, অবৈধভাবে জুয়ার আসর বসানোর অভিযোগে গুলশান ও মতিঝিল থানায় চারটি মামলা করা হয়।
এরপর ২০ সেপ্টেম্বর রাতে কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালায় র্যাব। সেখান থেকে হলুদ রংয়ের বিশেষ ধরনের ইয়াবা ট্যাবলেট ও অস্ত্রসহ কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। এছাড়া অভিযানে ক্যাসিনো চালানোর বিভিন্ন সরঞ্জাম ও জুয়া খেলার বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
একইদিন নিকেতনের ১১৩ নম্বর বাসা থেকে যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া (জি কে) শামীমকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। এ সময় সেখান থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা ও একটি অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র জব্দ করা হয়।
৪ অক্টোবর (শুক্রবার) গ্রেফতার করা হয় জি কে শামীম ও খালেদের অবৈধ আয়ের ভাগীদার ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী জিসান আহমেদকে।
- আরও পড়ুন >> ‘বুয়েটে অপরাধী যেই হোক, আইন নিজস্ব গতিতে চলবে’
এরই ধারাবাহিকতায় রোববারভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে যুবলীগের ঢাকা দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গ্রেফতার করে র্যাব। এ সময় তার ক্যাসিনো ব্যবসার ভাগীদার এনামুল হক আরমানকেও গ্রেফতার করা হয়।
তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর ক্লাবপাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে জুয়ার আসর ও ক্যাসিনো পরিচালনার অভিযোগ রয়েছে। এই দুজনকে ছয় মাস করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।