আবরার হত্যা : রক্তমাখা স্ট্যাম্প লাঠি চাপাতি উদ্ধার

ক্যাম্পাস প্রতিনিধি

আবরার হত্যা
ছবি : সংগৃহিত

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের যে রুমটিতে আবরার ফাহাদকে হত্যা করা হয়েছিল সেখান থেকে লাঠি, ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প, চাপাতিসহ নানা আলামত সংগ্রহ করেছে পুলিশ। পুলিশের ক্রাইম সিন ইউনিট, মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, চকবাজার থানা পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।

আজ সোমবার দুপুরে শেরেবাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুমটি পরিদর্শন করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়। তিনি সাংবাদিকদের জানান, আবরারকে পিটিয়ে হত্যার আলামত পাওয়া গেছে। ঘটনাটি তদন্তে ডিবি, থানা পুলিশ কাজ করছে। যারা জড়িত তারা অবশ্যই আইনের আওতায় আসবে।

তিনি বলেন, যে রুমে ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা শুনেছি, সে রুমটিতে ভিজিট করেছি। আলামত সংগ্রহ করেছি। সেগুলো পর্যালোচনা করছি। যারা জড়িত তাদের পূর্ণাঙ্গ বিবরণী তদন্তে চলে আসবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, তদন্তে রাজনীতিক প্রভাব পড়বে না।

পুলিশ জানায়, ২০১১ নম্বর রুম থেকে পুলিশ তিনটি খালি মদের বোতল, চারটি ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প, একটি চাপাতি, দুটি লাঠি উদ্ধার করেছে। স্ট্যাম্পগুলোর মধ্যে একটিতে লালচে দাগ রয়েছে। এটি শুকনা রক্তের দাগ হতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।

এদিকে বুয়েট ক্যাম্পাসে থমথমে পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। শেরেবাংলা হলের প্রভোস্টের রুমের সামনে অনেক শিক্ষার্থী অবস্থান করছে।

এ দিকে শিক্ষার্থীরা হল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ না দেখানোর অভিযোগ করেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, যেকোন ঘটনায় হলের শিক্ষার্থীরা ফুটেজ দেখার অধিকার রাখে। আবরারের ঘটনায় আমরা ফুটেজ দেখতে চাইলে প্রথমে হল কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের মধ্যে একজনকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখাতে রাজি হয়। এরপর শিক্ষার্থীরা না মানলে পাঁচজনকে ফুটেজ দেখাতে রাজি হয়।

তবে হল কর্তৃপক্ষ জানায়, যারা যারা সিসিটিভি ফুটেজ দেখবে তাদের নাম এই হত্যা মামলার সাক্ষীর জায়গায় উল্লেখ করা হবে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের কেউই ফুটেজ দেখেনি।

এদিকে হল কর্তৃপক্ষের শর্ত প্রত্যাহারের জন্য হলের রুমের বাইরে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।

এ দিকে শিক্ষার্থীরা আবরারের মৃত্যুর বিষয়ে যাদের দায়ী করছে, তারা হলেন- বুয়েট ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, উপ-সমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপ-আইন সম্পাদক অমিত সাহা এবং সহ-সম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু।

৬ অক্টোবর দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং আরেকজন সহ-সভাপতি।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে