জাবি ভিসিকে অবরোধকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক

জাবি ভিসিকে অবরোধকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা
জাবি ভিসিকে অবরোধকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা। ছবি : সংগৃহিত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ভিসিকে অবরোধকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা নবম দিনের মতো আজ মঙ্গলবার সকালে ক্যাম্পাসে অবস্থান করেন তারা। বেলা ১২টার দিকে হঠাৎ ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী তাদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। এতে তাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

জানা যায়, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। তারা অনেক নারী কর্মীদেরও ধরে নিয়ে চড় লাথি মারতে মারতে নিয়ে যায়। তারা বলেন, হামলাকারীরা ভিসি ফারজানা ইসলামের পক্ষ হয়ে উপাচার্যপন্থি শিক্ষকদের প্ররোচনায় এই হামলা চালিয়েছে। হামলাকারীরা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের পরিচিত মুখ এবং তারা দলীয় স্লোগান দিতে দিতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন তারা।

আন্দোলনকারীরা বলছেন, উপাচার্য ফারজানা ইসলামের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। অন্যদিকে, উপাচার্য ফারজানা ইসলামের পক্ষে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়েছেন বেশ কয়েকজন শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ অবস্থায় ক্যাম্পাসে চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

গতকাল সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ে টানা অষ্টম দিনের মতো দুটি প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করে রাখেন আন্দোলনকারীরা। ভবন দুটির কোনো ফটক খুলতে না পারায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অপেক্ষা করে ফিরে গেছেন। অফিস করতে আসেননি প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কেউই।

এ ছাড়া পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিস ভবনে আন্দোলনকারীরা তালা দেওয়ায় কয়েকটি বিভাগে চূড়ান্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। একপর্যায়ে প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তার হস্তক্ষেপে তালা কেটে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ভবন খোলা হয়।

এর আগে চলমান আন্দোলন বিষয়ে গত রবিবার রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে তাঁর ঢাকার হেয়ার রোডের বাসায় বৈঠক করেন আন্দোলনকারী সাত শিক্ষক।

বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী উপাচার্য ও তাঁর প্রশাসন নিয়ে আন্দোলনকারীদের সব অভিযোগ লিখিত আকারে জানাতে বলেছেন। বিষয়টি তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করবেন এবং আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অভিযোগ প্রমাণিত হলে উপাচার্য ফারজানা ইসলামকে অপসারণ করা হবে।

তবে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জানান, দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা। ফলে আজ মঙ্গলবারও অবরোধ ও সর্বাত্মক ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে