চলতি বছরের ক্রিসমাস উদযাপনে গাজা উপত্যকার খ্রিস্টানদের বেথেলহেম ও জেরুজালেমের মতো পবিত্র শহরগুলোতে ভ্রমণের সুযোগ দেয়া হবে না বলে জানিয়েছে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ।
গাজার খ্রিস্টানদের দেশের বাইরে যেতে অনুমতি দেয়া হলেও তাদের ইসরাইল ও অধিকৃত পশ্চিমতীরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সামরিক যোগাযোগ বিষয়ক একজন মুখপাত্র এমন তথ্য দিয়েছেন। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।
প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজা উপত্যকা কঠোরভাবে অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরাইল।
ওই মুখপাত্র বলেন, নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে গাজাবাসীকে ইসরাইলের অ্যালেনবি ব্রিজের সীমান্ত দিয়ে দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ইসরাইল ও পশ্চিমতীরের শহরগুলোতে তারা ভ্রমণ করতে পারবেন না।
২০ লাখ জনগোষ্ঠীর সরু উপকূলীয় উপত্যকাটিতে হাজারখানেক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী রয়েছেন। তাদের অধিকাংশই গ্রিক অর্থোডক্স।
চলতি বছরে ভ্রমণের অনুমতি দেয়ার সাধারণ নীতি লঙ্ঘন করছে দখলদার ইসরাইল। গত বছর গাজার সাতশ খিস্টানকে জেরুজালেম, বেথেলহেম, নাসিরাহ ও অন্যান্য পবিত্র শহরে ভ্রমণের সুযোগ দেয়া হয়েছিল।
পবিত্র ধর্মীয় উৎসবে প্রতিবছর এসব শহরে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী অংশগ্রহণ করেন।
ইসরাইলি মানবাধিকার গোষ্ঠী গিশা বলছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দুটি অংশের মধ্যে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞায় কড়াকড়ি আরোপ করতে এই নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। পশ্চিমতীর ও গাজাকে বিচ্ছিন্ন করার নীতিকে আরও তীব্রতর করতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
পশ্চিমতীর ও গাজা মিলিয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। ১৯৬৭ সালের মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে এই ভূখণ্ড দখল করে নিয়েছে ইসরাইল।
পশ্চিমতীরে গাজার লোকজনের ওপর ভ্রমণের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে আসছে ইসরাইল। ফিলিস্তিনিদের ভূমি দখল করে গড়ে ওঠা অবৈধ দেশটি বলছে, স্বল্প সময়ের অনুমতি নিয়ে গাজার বহু অধিবাসী এখানে অবৈধভাবে বসবাস করছেন।
গাজায় এক খ্রিস্টান নারী কণ্ঠে আশা জাগিয়ে বলেন, ইসরাইল হয়তো তার নীতি থেকে সরে আসবে। পশ্চিমতীরের রামাল্লা শহরে তার পরিবার বসবাস করেন। ভ্রমণের অনুমতি পেলে তিনি পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন।
রান্দা ইল-আমাশ নামের ওই প্রৌঢ়া বলেন, প্রতিবছর আমি প্রার্থনা করি, ক্রিস্টমাস উদযাপনে যাতে তারা আমাকে ভ্রমণের সুযোগ দেন। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে চাই।
খ্রিস্টানদের ভ্রমণের সুযোগ দেয়া হলে বেথেলহেম ও জেরুজালেম আনন্দপূর্ণ উৎসবে পরিণত হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তবে ইসরাইলের এমন উদ্যোগের নিন্দা জানিয়েছেন খ্রিষ্টান নেতারা। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের কাছে তারা আবেদন করবেন বলে জানিয়েছেন।
স্থানীয় এক গির্জা নেতার উপদেষ্টা ওয়াদি আবু নাসসার বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গা থেকে অন্যান্য লোক বেথেলহেম সফরের সুযোগ পাচ্ছেন। কাজেই আমি মনে করি, গাজার লোকজনেরও সেই অধিকার রয়েছে।