জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক খুনি রাশেদ চৌধুরী ও নূর চৌধুরীকে জন্মশতবার্ষিকীর বছরে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারকার্য সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন।
‘নবমবারের মতো শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাদের অভিনন্দন’ শীষর্ক এক আলোচনা সভায় যোগ দিয়ে আজ রোববার একথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড।
জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে পাঁচ আসামির ফাঁসি কার্যকর করা হলেও মৃত্যুদণ্ড পাওয়া ছয় আসামি খন্দকার আবদুর রশিদ, এ এম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান এখনও পলাতক। তাদের মধ্যে নূর কানাডায়, রাশেদ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। বাকিদের অবস্থান শনাক্ত হয়নি।
ড. মোমেন বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচার হয়েছে। তবে এখনও অনেকের সাজা কার্যকর হয়নি। কেউ কেউ বিদেশে পালিয়ে রয়েছে। আমরা জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে পালিয়ে থাকা দুই খুনিকে দেশে ফিরিয়ে আনবো। এদের একজন আমেরিকায় এবং অন্যজন ইংল্যান্ডে রয়েছেন।’
২০২০ সালের ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বছর পূর্ণ হবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দিনটি বেশ ঘটা করে পালন করবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আগে অন্তত নূর ও রাশেদকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করছে সরকার।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ হত্যা করে খুনিরা। সে সময় দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।
- সুন্দরবন বাঁচাতে বর্জ্য দূষণ ঠেকানোর উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার
- প্রাথমিকে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ
সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের আমলে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মধ্যমে এই হত্যাকাণ্ডের বিচারের পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর এতে করে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিরা ছাড়া পেয়ে যায়।
২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ খোলে। তখন বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিচারের গতি শ্লথ হয়ে যায়। আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দণ্ডিত পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।
২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয় সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), এ কে বজলুল হুদা ও এ কে এম মহিউদ্দিনের (আর্টিলারি)।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন ছিল না। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে দেখিয়েছেন আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। অপরাধ করলে তার বিচার হবেই।’
সদ্য শেষ হওয়া আওয়ামী লীগের ২১তম ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে নবমবারের মতো আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশের উন্নয়ন ধারা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার বিকল্প নেই জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। তার হাতকে আরও শক্তিশালী করতে হবে।’