আগামী ২৩ জানুয়ারি আন্তর্জাতিক আদালতে (আইসিজে) মিয়ানমারের গণহত্যার মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে গাম্বিয়ার করা মামলার রায় দেওয়া হবে।
সোমবার গাম্বিয়ার বিচারবিষয়ক মন্ত্রণালয় এক টুইট বার্তায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
গত নভেম্বরে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা করে পশ্চিম আফ্রিকার মুসলিম দেশ গাম্বিয়া। মিয়ানমার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যা চালিয়েছে এমন অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়।
আন্তর্জাতিক আদালতে এই মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয় গত বছরের ১০ থেকে ১২ ডিসেম্বর। সেসময় গাম্বিয়ার পক্ষে লড়েন দেশটির আইনমন্ত্রী এবং মিয়ানমারের পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন দেশটির কার্যত সরকার প্রধান অং সাং সু চি।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ১৯৮৪ সালের আন্তর্জাতিক জেনোসাইড কনভেনশন ভঙ্গের অভিযোগ এনেছে গাম্বিয়া। ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের বেশ কয়েকটি সেনা পোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাখাইনে অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী।
অভিযানের নামে সেখানে রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘরে আগুন, নির্বিচারে রোহিঙ্গাদের হত্যা এবং নারীদের গণধর্ষণ করা হয়। মিয়ানমার সেনাদের নির্যাতন থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয় সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম।
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এই মামলার দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে গত মাসে নেদারল্যান্ডসের রাজধানী হেগেতে নিজের দেশের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন দেশটির ডি ফ্যাক্টো নেত্রী অং সান সু চি। সেখানে তিনি মিয়ানমার সেনাদের গণহত্যার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, এই মামলার শুনানির অধিকার নেই আন্তর্জাতিক আদালতের।
অপরদিকে মিয়ানমারের গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকারের জবাবে গাম্বিয়ার এক আইনজীবী আদালতের কাছে রোহিঙ্গা হত্যা ও নিপীড়নের বেশ কিছু ছবি প্রদর্শন করেন। এগুলোকে গণহত্যার আলামত হিসেবে আদালতের সামনে উপস্থাপন করেন তিনি।
সে সময় গাম্বিয়ার এক আইনজীবী বলেন, সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অভিযোগে নিজ দেশের সৈন্যদের জবাবদিহি করার জন্য মিয়ানমারকে বিশ্বাস করা যায় না এবং সহিংসতা বন্ধের জন্য এখনই ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।