ঢাবির এ এফ রহমান হলে নবীনদের রিডিং রুমে যাওয়ায় নিষেধাজ্ঞা!

ঢাবি প্রতিনিধি

এ এফ রহমান হল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলে প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের রিডিং রুমে যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন হলের একটি ছাত্রসংগঠনের কিছু নেতা- এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কেউ রিডিং রুমে গেলে তাকে মারধরের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী।

পড়াশোনায় ব্যস্ত হওয়ার বদলে শিক্ষার্থীদের রাজনীতিমুখী করাই এ নির্দেশনার উদ্দেশ্য বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান।

স্যার এ এফ রহমান হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী গ্রুপের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা নিয়মিত গেস্টরুমে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের ওপর এ নিষেধ জারি করেছেন বলে জানা গেছে।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা হলের ক্যান্টিনে যেন না খান, সে নির্দেশও দেয়া হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম বর্ষের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের ইমিডিয়েট সিনিয়র ভাইয়েরা আমাদের রিডিং রুমে যেতে নিষেধ করেছেন। আমাদের হলের রিডিং রুমে আমরা পড়তে না পারলে পড়ব কোথায়? তাছাড়া, হলে দ্বিতীয় বর্ষের ভাইয়েরা গেস্টরুমে অনেক চাপ দেন। অনেক ভয়-ভীতি দেখান। রাতের বেলা আমাদের সবাইকে হল থেকে বের করে দেন এবং রাত ১টা-২টার আগে হলে আসতে দেন না। এতে আমাদের সকালের ক্লাস মিস হয়।

প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী জানান, তাদের নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত তারা যেন রিডিং রুমে না যান এবং গেলে তাদের গেস্টরুমে নিয়ে মারধর করা হবে বলে হুমকি দিয়েছেন দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ কর্মীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গেস্টরুমে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন জাপানিজ স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রলীগ কর্মী আরিফ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অয়ন, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের হাসান, সমাজকল্যাণ বিভাগের পলাশ, পালি ও বুদ্ধিষ্ট স্টাডিজ বিভাগের মাহবুব, সমাজকল্যাণ বিভাগের জাবেদ, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তানভীর, পালি ও বুদ্ধিষ্ট স্টাডিজ  বিভাগের আকির।

তবে তারা নিজ থেকে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের কোনো নির্দেশনা দেন না বলে দাবি করেন দ্বিতীয় বর্ষের এক শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, সিনিয়ররা যা নির্দেশনা দেয় তা তারা বাস্তবায়ন করেন মাত্র।

নির্দেশের অভিযোগের আঙুল উঠছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের অনুসারী গ্রুপের হল শাখা ছাত্রলীগের দিকে। নাম আসছে হল শাখা ছাত্রলীগের গত কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন ও সহ-সভাপতি হুসাইন মাহমুদ আপেলের।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের রিডিং রুমে নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে জানতে চাইলে আল আমিন কিছু জানেন না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কাউকে এ রকম নির্দেশ দেবে এটা অসম্ভব। তবে আমি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রাতে কথা বলে দেখব তারা এ রকম কোনো নির্দেশ দিয়েছে কি না।

স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ এম সাইফুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে জানান, কোনো শিক্ষার্থীর কাছ থেকে এ ধরনের কোনো অভিযোগ তারা পাননি। তিনি বলেন, হতে পারে এসব শিক্ষার্থী এক গ্রুপে উঠে পরে গ্রুপ বদল করেছে। তাই তারা অন্য গ্রুপের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ দিচ্ছে। আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।

শেয়ার করুন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে